রাশিয়া-অধিকৃত এলাকা পুনর্দখলের ক্ষেত্রে ধারাবাহিক সাফল্য চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। পূবে তীব্র সংঘাত সত্ত্বেও জমি ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর ইউক্রেনের বাহিনী। কাতারের মধ্যস্থতায় রাশিয়া কিছু ইউক্রেনীয় বন্দিদের মুক্তি দিচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য সংকটের দিকে বিশ্বের নজর সরে যাওয়ায় রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনকে আরো বিপাকে ফেলছে, এমন আশঙ্কার মাঝে প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন। রাশিয়ার হামলা শুরু হবার প্রায় ২০ মাস পরেও ইউক্রেন হানাদারদের দেশছাড়া করতে পারেনি। রোববারের ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি রুশ অধিকৃত এলাকা পুনর্দখল করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তার মতে, ইউক্রেনের প্রতিদিন সুফলের প্রয়োজন রয়েছে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে লাগাতার অগ্রগতি অত্যন্ত জরুরি৷ জেলেনস্কি বলেন, ৫০০ মিটার হোক বা এক কিলোমিটার, ইউক্রেনকে এগিয়ে যেতেই হবে।
শুধু হামাস ও ইসরায়েল নয়, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যেও মধ্যস্থতার ক্ষেত্রে কাতারের ভূমিকার কথা শোনা যাচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল তানির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। রাশিয়ার হাতে আটক ইউক্রেনীয় নাগরিকদের মুক্তির ক্ষেত্রে কাতারের ভূমিকা সম্পর্কে দুই নেতার কথা হয়েছে। সেই উদ্যোগের ফল হিসেবে গত সপ্তাহে চারজন ইউক্রেনীয় শিশু ও কিশোর মুক্তি পেয়েছে।
আপাতত ইউক্রেনের পূর্বে দনেৎস্ক শহরের কাছে আভদিভকা ও মারিয়িনকায় দুই পক্ষের মধ্যে জোরালো সংঘর্ষ চলছে। শুধু রোববারই রাশিয়ার ২০টি হামলা প্রতিহত করা হয়েছে বলে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। হামলা সত্ত্বেও আভদিভকা শহরে নিজস্ব অবস্থান সুরক্ষিত আছে বলে ইউক্রেন দাবি করছে। ২০১৪ সালের হামলায় একবার রাশিয়ার দখলে এলেও তারপর থেকে ইউক্রেনই শহরটি নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে সংঘাতের কারণে প্রায় ৩০ হাজার জনসংখ্যার শহরে মাত্র ১ হাজার ৬০০-এর মতো মানুষ অবশিষ্ট রয়েছে।
শনিবার উত্তর-পূর্বে খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ছয় জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছে। শহরের উপকণ্ঠে ডাক বিভাগের এক স্থাপনার উপর সেই হামলার পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তাঁর বার্তায় ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও দেখান। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের সূত্র অনুযায়ী রোববার বাখমুত শহরের কাছেও এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুজন নিহত হয়েছে।
রাশিয়ার দাবি, রোববার অধিকৃত ক্রাইমিয়ার উপর ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করা হয়েছে। আসন্ন শীতকালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ আরও জোরালো হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে গত বছরের মতো জ্বালানি অবকাঠামোর উপর রাশিয়ার আরো হামলার আশঙ্কা করছে ইউক্রেন।
যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরেও রাশিয়ার ওপর চাপ বজায় রাখতে চায় ইউক্রেন। রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে জেলেনস্কি শান্তির লক্ষ্যে এক শীর্ষ সম্মেলনের উদ্যোগের কথা বলেছেন। আগামী পদক্ষেপ হিসেবে চলতি মাসেই মাল্টায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের বৈঠক হবে। তবে যে কোনো সমাধানসূত্রের মধ্যে ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়ে অটল।
সূত্র : ডয়চে ভেলে