আওয়ামী লীগ সব সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থাকবে : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সব সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থাকবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অতীতের মতো সব সময় তাদের পাশে থাকবে। আমরা আওয়ামী লীগ সব সময় আপনাদের (হিন্দু সম্প্রদায়) পাশে ছিলাম এবং থাকব।
আজ রোববার শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাঅষ্টমীর দিনে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
দেশ-বিদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে এই পূজা সম্পন্ন হোক সেটাই আমরা চাই। আমরা পাশে আছি। আইন-শৃংখলা রক্ষকারি বাহিনীর সদস্য থেকে শুরু করে আমাদের সংগঠনের নেতা-কর্মী প্রত্যেকেই পাশে থাকবেন। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন এখানে না ঘটতে পারে সে জন্য আমরা সকলেই সতর্ক থাকব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষ একসঙ্গে যুদ্ধ করেই বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। কিন্তু ’৭৫ এ জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল তা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। হিন্দু সম্প্রদাযের ওপর অকথ্য অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে। এই বাংলাদেশে আমরা দেখেছি ’৯২ সালের পর এবং ২০০১ সালে এবং এরপরেও বার বার আঘাত এসেছে। আমরা আওয়ামী লীগ সব সময় আপনাদের পাশে ছিলাম, পাশে আছি।
বাংলাদেশের জনগণ উদারমনা এবং সব সময় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে কারণেই আমাদের শ্লোগান ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। ঠিক এইভাবেই আমরা সবাই উৎসব পালন করে যাচ্ছি। আজ সারাদেশে ৩২ হাজারের ওপর পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা চলছে। তাঁর নিজের এলাকা গোপালগঞ্জের টৃুঙ্গিপাড়া-কোটালিপাড়ায় ৪৪০টি পূজামন্ডপ এবং ঢাকায় ২৪৬টি পূজাম-প রয়েছে।
তিনি বলেন, এই পূজা সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে উৎসবের মধ্যদিয়ে পালিত হচ্ছে। আমাদের আইন-শৃংখলা রক্ষকারি বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের যতটুকু করার আমরা করেছি।
হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন দাবির অনেকগুলোই সরকার ইতোমধ্যে পূরণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছুদিন আগেই এর নেতৃবন্দের সঙ্গে তিনি বসেন এবং সেখানে বিস্তারিত বলেছেন।
তিনি বলেন, আজ যেহেতু উৎসবের দিন তাই কি দিলাম, কি করলাম বা কি পেলাম, কি পেলাম না সে কথায় আমি যাবনা।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এই মাটির সন্তান সবাই। এই মাটিতে নিজ নিজ অধিকার নিয়ে আপনারা বসবাস করবেন। আর মহান মুক্তিযুদ্ধে সবাই একহয়ে যুদ্ধ করেছেন। তাই এখানে সকলেরই সমান অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার যাতে বলবৎ ও সুপ্রতিষ্ঠিত থাকে আমরা সব সময় সেই চেষ্টাই করি।
তিনি বলেন, আপনারাও আশির্বাদ করেন বাংলাদেশের জন্য। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। এখন ঘরে ঘরে খাবার আছে, বিদ্যুৎ আছে, চিকিৎসাসেবা আমরা মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। ২০০৮ এর নির্বাচনে বলেছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ করবো সেটা আমরা করে দিয়েছি। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। ইনশাল্লাহ আমরা সেটাও করতে পারবো। সারাদেশে উন্নয়নের ছোঁয়া, কেননা মানুষের কল্যাণেই আমাদের কাজ। আর মানুষের কল্যাণ করাকেই আমরা একমাত্র দায়িত্ব বলে মনে করি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সব সময় বিশ্বাস করি সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। সুরা কাফেরুনের আয়াত ‘লাকুম দিনূকুম ওয়ালিয়াদীন’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোরআন শরিফেই সবাইকে নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দেয়া হয়েছে। কাজেই কেউ কারো ওপর হস্তক্ষেপ করবে না।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথও বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রোমেন ম-ল।
এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম উপস্থিত ছিলেন।
শুরুতে প্রধানমন্ত্রী পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং পরে নৃত্য উপভোগ করেন।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর