দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের ৩২টি শাখায় ৮৭ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ঋণ খেলাপির দায়ে ৫ হাজার ৭৩৯ জনকে ঋণ খেলাপি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এর মধ্যে শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপির কাছে ১৪ কোটি ৩৭ লাখ ৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে।
দিনাজপুর সোনালী ব্যাংকের উপ-মহা ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) হুমায়ুন কবির জানান, ১০ বছরের অধিক সময় যে সব ঋণ গ্রহণকারীর কাছে ব্যাংকের ঋণের টাকা পাওনা রয়েছে তাদের তালিকাভুক্ত করে ঋণ আদায়ে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জেলার ১৩টি উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের ৩২টি শাখায় ৩১ হাজার ৩শ ৫৬ জন ঋণকারীর কাছে ৩০৮ কোটি ১৫ লাখ ৮২ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
এসব ঋণকারীর মধ্যে ৫ হাজার ৭শ ৩৯ জন খেলাপী ঋণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে তাদের কাছে পাওনা ৮৭ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
শীর্ষ ২০ জন খেলাপি ঋণীর মধ্যে যাদের ঋণ গ্রহণ ১০ বছর পার হয়ে গেছে সেসব ঋণীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেও ঋণের টাকা আদায় করা যাচ্ছে না। তাই এ ২০ ঋণীকে শীর্ষ খেলাপী ঋণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- দিনাজপুর সদর উপজেলার মেসার্স লিজা টেক্সটাইল মিল, দিনাজপুর ফাইবার্স লিমিটেড, সোনালী অটো বিস্কুট ফ্যাক্টরি, সাগর হাসকিং মিল, আব্দুস সাত্তার ট্রেডার্স, আসাদ এন্টারপ্রাইজ, জরিনা ট্রেডার্স, হযরত লালশাহ্ ইন্ডাষ্ট্রিজ, বাংলাদেশ অয়েল মিল, বিরামপুর উপজেলার রহমান হাসকিং মিল, রাজিব ট্রেডার্স, দেলোয়ার এন্টারপ্রাইজ, আরিফ হার্ডওয়ার, বোচাগঞ্জ উপজেলার ভাইভাই ইন্ডাষ্ট্রিজ, রশিদুল হাসকিং মিল, পার্বতীপুর উপজেলার জুলেখা বোর্ন ক্রাসিং, আনোয়ার ডাইনিং এন্ড উইভিং, হাকিমপুর উপজেলার রহমান ট্রেডার্স এবং ঘোড়াঘাট উপজেলার তিন ভাই হাসকিং মিল ও বিপাশা এন্টারপ্রাইজ।
এ ২০ ঋণীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেও ঋণ আদায় করা যাচ্ছে না। এদের নিকট ১৪ কোটি ৩৭ লাখ ৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে বলে জানান ডিজিএম হুমায়ুন কবির।
তিনি আরও জানান, অবশিষ্ট খেলাপী ঋণ গ্রহীতা ৫ হাজার ৭শ ১৯ জনের নিকট ৭২ কোটি ৭৯ লাখ ৮৯ হাজার টাকা পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে ব্যাংকিং প্রক্রিয়ায় কার্যক্রম চলছে।
তবে খেলাপী ঋণীদের মধ্যে যাদের ব্যবসায়ী কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে তাদের সচল করতে ঋণ প্রক্রিয়া নবায়ণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
যেসব ঋণ গ্রহীতা ঋণের টাকা পরিশোধে আগ্রহী নয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে যদি কোনো অনিয়ম থাকে সে বিষয়গুলো ব্যাংকের তদন্ত দল অনুসন্ধান শুরু করেবে বলে জানান ডিজিএম।