মিয়ানমারে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে দেশটির জান্তা সেনারা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে সরকারি সেনাদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জান্তা-বিরোধী যোদ্ধা।
গত শুক্রবার রাতে সাগাইং অঞ্চলের মাইনমু শহরে চালানো অতর্কিত দুটি হামলায় প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটে।
আজ সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার রাতে সাগাইং অঞ্চলের মাইনমু টাউনশিপে অতর্কিতভাবে চালানো দুটি হামলায় পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)-সহ সশস্ত্র জান্তাবিরোধী প্রতিরোধ গোষ্ঠীর পঁচিশ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যে মাইনমু শহরের ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে চ্যা ইয়ার তাও গ্রামের কাছে জান্তা বাহিনীর প্রথম আক্রমণটি হয়। ১৮ জন গেরিলা যোদ্ধাকে বহনকারী একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়।
হামলার শিকার এই প্রতিরোধ যোদ্ধারা মাইনমু এবং মায়াংয়ে যাচ্ছিলেন। সাগাইং ডিস্ট্রিক্ট পিডিএফ-এর ৫ম ব্যাটালিয়নের মুখপাত্রের মতে, জান্তা বাহিনীর ওই হামলায় গাড়ির আরোহীদের সবাই নিহত হয়েছেন।
এর কয়েক মিনিট পর প্রতিরোধ বাহিনীর সাত সদস্যের আরেকটি মোটরসাইকেল কনভয়কে লক্ষ্য করে জান্তা বাহিনীর একই ইউনিট হামলা চালায়। পিডিএফ তথ্য কর্মকর্তা বলেন, ওই হামলায়ও কেউ বেঁচে নেই।
নিহত যোদ্ধারা সাগাইং ডিস্ট্রিক্ট পিডিএফের ৫ম ও ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের পাশাপাশি মাইনমু টাউনশিপের কিয়াউত মিন গ্রাম প্রতিরক্ষা দলের সদস্য ছিল। তারা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের (আইডিপি) দখলকৃত স্থান থেকে নিরাপদে পালাতে সাহায্য করার চেষ্টা করছিলেন বলে জানা গেছে।
পিডিএফ মুখপাত্র বলেছেন, ‘যখন সামরিক বাহিনী ওই গ্রামগুলোতে আক্রমণ শুরু করে, তখন আমার ব্যাটালিয়নের কমরেডরা ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন, তারা এবং তাদের বন্ধুরা বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। তাদের আক্রমণের প্রথম প্রচেষ্টার সময় তারা পালিয়ে যায়। এরপর বাকি বাস্তুচ্যুতদের সাহায্য করতে তারা ফিরে গেলে তাদের ওপর আবার হামলা করে হত্যা করা হয়।’
এদিকে অতর্কিত এই হামলার পর জান্তাপন্থি টেলিগ্রাম চ্যানেলের বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়। এসব ছবিতে জ্বলন্ত গাড়ি, রক্তাক্ত মরদেহ দেখা যায়। পরে নিহতদের মরদেহ ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে যাওয়া হয় এবং শনিবার বিকেলে তাদের স্বজন ও ব্যাটালিয়নের সদস্যরা দাফন করে।