উত্তর কোরিয়া সফরে যেতে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত চার বছরের মধ্যে বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এই দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি বৈঠক হয় এবং এই বৈঠকের পরই পুতিনকে পিয়ংইয়ং সফরের আমন্ত্রণ জানান কিম।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
উত্তর কোরীয় নেতা কিম বর্তমানে রাশিয়া সফর করছেন। মূলত ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মধ্যে পুতিন নিজের পক্ষের জোটকে শক্তিশালী করতে চাইছেন এবং বিপরীত দিকে উত্তর কোরিয়ার নেতা তার দেশের সামরিক আধুনিকীকরণকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে কিম জং উন তার ব্যক্তিগত ট্রেনে করে রাশিয়ায় প্রবেশ করেন। এর পরদিন ৭০ বছর বয়সী পুতিন এবং ৩৯ বছর বয়সী কিম তাদের মন্ত্রীদের সাথে নিয়ে পরবর্তী কয়েক ঘণ্টা বৈঠক করেন এবং এরপর বৈশ্বিক নানা ইস্যু ও একে অপরকে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো নিয়েও আলোচনা করেন।
বৈঠকের পর পুতিনকে ‘সুবিধাজনক সময়ে’ উত্তর কোরিয়ায় সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান কিম। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কেসিএনএ বৃহস্পতিবার বলেছে, ‘পুতিন আনন্দের সাথে আমন্ত্রণটি গ্রহণ করেছেন এবং রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার বন্ধুত্বের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তার ইচ্ছা পুনর্নিশ্চিত করেছেন।’
অবশ্য রাশিয়ায় উভয় নেতার এই আলোচনা যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। পশ্চিমাদের আশঙ্কা, ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য কিম হয়তো মস্কোর কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে পারে, আর সেটিও সম্ভবত প্রযুক্তির বিনিময়ে যা পিয়ংইয়ংয়ের সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
আল জাজিরা বলছে, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ এই নেতা রাশিয়ার একটি বিমান কারখানা পরিদর্শন করবেন এবং ভ্লাদিভোস্তকে ভ্রমণ করবেন। সেখানে তিনি রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহর দেখবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কিমের প্রতিনিধি দলে তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী, তার শীর্ষ সামরিক কমান্ডার এবং দেশটির যুদ্ধাস্ত্র বিভাগের পরিচালক রয়েছেন।
কেসিএনএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই নেতা ‘সাম্রাজ্যবাদীদের সামরিক হুমকি, উস্কানি ও অত্যাচার’ মোকাবিলায় কৌশলগত ও যুদ্ধ কৌশল সংক্রান্ত সহযোগিতা আরও জোরদার করতে সম্মত হয়েছেন।
অন্যদিকে পুতিন ‘উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও বন্ধুত্ব জোরদার করার’ প্রশংসা করেছেন এবং সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি উত্তর কোরিয়ার সাথে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ‘সম্ভাবনা’ দেখেছেন।
তবে ওয়াশিংটন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, রাশিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ায় বা উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ায় অস্ত্র হস্তান্তরের কোনও ঘটনা ঘটলে উভয় দেশের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে। এমনকি ইউক্রেনে কয়েক হাজার সৈন্য হারানোর পরে সাহায্যের জন্য পুতিন কিমের কাছে ‘ভিক্ষা’ করছেন বলেও মন্তব্য করেছে ওয়াশিংটন।