দেশীয় চলচ্চিত্র এবং নাট্যাঙ্গণের জীবন্ত কিংবদন্তী বৃহস্পতিবার অভিনেতা আরিফুল হকের ৮১তম জন্মদিন।১৯৩১ সালে এই দিনে তিনি কলকাতার হাওড়ায় জন্মগ্রহন করেন।
আরিফুল হক সর্বপ্রথম উত্তম কুমারের সাথে ‘উত্তরায়ণ’ ছবিতে অভিনয় করেন। ছবিটি নির্মাণ করেছিলেন বিভূতি লাহা। খুব ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। একই পরিচালকের ‘অন্তরাল’ ছবিতেও তার প্রধান নায়কের ভূমিকায় অভিনয়ের কথা ছিলো। কিন্তু পরে ঢাকায় চলে আসার কারণে সে ছবিতে আর কাজ করা হয়ে উঠেনি। ১৯৬৪ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন।
পরে এদেশে তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ছবি হচ্ছে লালন ফকির, সারেং বউ, বড় বাড়ির মেয়ে, সূর্য কন্যা, সুন্দরী, সখি তুমি কার, কথা দিলাম, নতুন বউ, এখনই সময়, পিতা মাতা সন্তান, দেশপ্রেমিক, ঘৃণা, তোমাকে চাই, স্বপ্নের নায়ক ইত্যাদি।
ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ছিল তার প্রবল আকর্ষণ। তাই সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি তিনি কলকাতার দক্ষিণী সঙ্গীত বিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্র সঙ্গীতের উপর চার বছরের ডিপ্লোমা কোর্সও সম্পন্ন করেন। এখানে এসেও স্বপ্ন ছিলো নিজেকে সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার। কিন্তু অডিশন দেবার পর নানান জটিলতার কারণে হলোনা।
একসময় টেলিভিশনে তার সুযোগ আসে। কিন্তু আতিকুল হক চৌধুরীর নির্দেশনায় একুশে ফেব্রুয়ারির একটি নাটকে অভিনয়ের পর দর্শকের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পান তিনি। আর গানে ফেরা সম্ভব হয়নি তার।
অভিনেতা হিসেবই নিজেকে সামনের পথে এগিয়ে নিয়ে যান তিনি।
বর্তমানে তিনি কানাডায় বসবাস করছেন। ২০০০ সালে স-পরিবারে তিনি কানাডা চলে যান। সেখানে তিনি স্ত্রী, পুত্র এবং কন্যার সাথে অবস্থান করছেন।
জন্মদিন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মুঠোফোনে কানাডা থেকে আরিফুল হক জানান, এখানে স্ত্রীম, ছেলে-মেয়ে. নাতি নাতনীদের সাথেই আসলে হেসে খেলে সময় চলে যায় আমার ।
দেখতে দেখতে বয়সতো অনেক হলো, আশির উপরে বয়স চলছে আমার। এই বয়সেও যে সুস্থভাবে বেঁচে আছি এ জন্য উপরওয়ালার কাছে শুকরিয়া। দেশের সবার কাছে দোয়া চাই যেন সবসময় ভালো থাকতে পারি।
প্রসঙ্গত, আরিফুল হক ২০০৮ সালে এবং চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ঢাকায় এসেছিলেন শুধু পারিবারিক কাজে। পারিবারিক কাজে এলেও তিনি নিয়মিত ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করেন এবং বেশ কয়েকটি ছবিতেও অভিনয় করেন ।
আরিফুল হক অভিনীত সাম্প্রতিক ছবিগুলো হচ্ছে একে এম ফিরোজ বাবু পরিচালিত ‘প্রেম বিষাদ’, এফ আই মানিক পরিচালিত ‘চিরদিনই তুমি আমার’ এবং খালিদ মাহমুদ মিঠু পরিচালিত ‘গহীনে শব্দ’।