তার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল ক্রিকেটবিশ্বে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পেরোতেই শোনা গেল বেঁচে আছেন জিম্বাবুয়ের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার হিথ স্ট্রিক।
তবে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। আর বেঁচে থাকার খবরটি নিশ্চিত করেছেন খোদ স্ট্রিক!
এক টুইটে আজ জিম্বাবুয়ের সাবেক পেসার হেনরি ওলেঙ্গা লিখেছিলেন, ‘দুঃখের সংবাদ এসেছে যে হিথ স্ট্রিক পরপারে চলে গেছে। শান্তিতে থেকো কিংবদন্তি। আমাদের দেশের সেরা অলরাউন্ডার। তোমার সঙ্গে খেলাটা ছিল আনন্দের। যখন আমার বোলিং স্পেল শেষ হয়ে যাবে, তখন পরপারে তোমার সঙ্গে দেখা হবে। ’
শুধু ওলোঙ্গা একা নন, একই খবর জানিয়ে টুইট করেছিলেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার শন উইলিয়ামস সহ আরও অনেকে। তাদের টুইটের সূত্র ধরে নিউজ করেছিল বাংলাদেশ ও বিশ্বের অনেক শীর্ষ সংবাদমাধ্যম। খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই ক্রিকেটবিশ্বের হাজারো মানুষ তা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। কিন্তু পরে জানা গেল, খবরটি ভুয়া।
ওলোঙ্গা নিজেই আগের টুইট ডিলিট করে দিয়েছেন। নতুন টুইটে তিনি হিথ স্ট্রিকের সঙ্গে চ্যাটের একটি অংশ শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি যে, হিথ স্ট্রিকের মৃত্যুর খবরটি সঠিক নয়। আমি মাত্রই তার কাছ থেকে জানলাম। থার্ড আম্পায়ার তাকে ফিরিয়ে এনেছেন। সে ভালোভাবেই জীবিত আছে। ‘
ওলোঙ্গার শেয়ার করা চ্যাটের স্ক্রিনশটে দেখা যায়, স্ট্রিক নিজেই ওলোঙ্গাকে বলছেন, ‘আমি ভালোভাবেই জীবিত আছি… রান আউটটি ঘুরিয়ে দাও, বন্ধু। ‘
জবাবে ওলোঙ্গা লিখেছেন, ‘হা হা, শুনে খুবই খুশি হলাম। ব্যাপারটা খুব দ্রুত ছড়িয়ে গেছে। তুমি একরাতের মধ্যে মারা গিয়েছিল ভাই। ‘
২০০০-২০০৪ সাল এই সময়ে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ছিলেন দেশটির ইতিহাসের সেরা অলরাউন্ডার স্ট্রিক। জাতীয় দলের হয়ে ৬৫টি টেস্টের সঙ্গে ১৮৯টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে ১০০ উইকেট নেওয়া জিম্বাবুয়ের একমাত্র বোলার স্ট্রিক। প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে অনেকটা একা হাতেই টেনেছেন দলকে।
বোলিংয়ের জন্য খ্যাতি থাকলেও ব্যাট হাতেও দারুণ অবদান রেখেছেন স্ট্রিক। টেস্টে ১৯৯০ ও ওয়ানডেতে করেছেন ২৯৪৩ রান। সাদা পোশাকে তার প্রথম ও একমাত্র টেস্ট সেঞ্চুরিতে হারারেতে এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক হওয়ার পর রাউয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয়টিতে আট উইকেট নিয়ে নিজের আগমন জানান দিয়েছিলেন স্ট্রিক।
২০০৫ সালে কাউন্টিতে ওয়ার্কশায়ারের অধিনায়ক হিসেবে দুই বছরের চুক্তি করেন তিনি। যদিও পরে সেটি ব্যক্তিগত কারণে সংক্ষিপ্ত হয়ে আসে। পরে ২০০৭ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইএসএলে) নাম লেখানোর পর তার ক্যারিয়ারের কার্যত ইতি ঘটে।
খেলোয়াড়ি জীবনের পর কোচিংয়ে নাম লেখান স্ট্রিক। জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ড, গুজরাট টাইটান্স, কলকাতা নাইট রাইডার্সের মতো দলগুলোতে কাজ করেন। ২০১৪ সালের মে মাসে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। ২০২১ সালে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে আইসিসি তাকে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে।