বান্দরবান পার্বত্য জেলার পার্শ্ববর্তী রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে আটক ৩৭ জনের মধ্যে ৩১ জনকে রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলেও পুলিশ তাদের বিভিন্নভাবে বাঁচানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে রামু থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি ফেরার পথে সন্দেহভাজন হামলাকারী হিসেবে নাইক্ষ্যংছড়ির ১৫ বিজিবির সদস্যরা ৩৭ জনকে আটক করে। পরে তাদের নাইক্ষ্যংছড়ি পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
কিন্তু পুলিশ বলছে, বিজিবি তাদের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে রামু যাওয়ার পথে আটক করে। অন্যদিকে, বিজিবি ঠিক তার উল্টোটা দাবি করেছে। বিজিবির দাবি, রামু থেকে তারা নাইক্ষ্যংছড়ি ফিরছিলেন।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের লে. কর্নেল মাহাবুবর রহমান জানান, আটকের সময় তারা রামু থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি ফিরছিলেন। পুলিশ কেন অন্য ধরনের কথা বলছে, তা তারা জানেন না বলে জানান তিনি।
এদিকে, স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ওই দিন আটকদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা থাকার কারণে তাদের বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশের এই বক্তব্য আটকদের বাঁচানোর প্রচেষ্টা বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
আটকদের মধ্যে গর্জনিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সরওয়ার কামাল, আওয়ামী লীগের সমর্থক মো. ইলিয়াস, বিএনপি নেতা মো. সৈয়দ কলিমুল্লাহসহ আরও বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতা রয়েছেন।
এদিকে, নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজাদ জানান, ঘটনার দিন নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে রামু যাওয়ার সময় বিজিবি তাদের আটক করে। বিজিবি এই ব্যাপারে রামু থানায় মামলা করেছে।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার সময় ২৯ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে বিজিবি সদস্যরা নাইক্ষ্যংছড়ি রামু সড়ক থেকে ৩৭ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে। পরে বিজিবির জিজ্ঞাসাবাদের পর ৩ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি ৩৪ জনের মধ্যে পুলিশ আরও একজনকে পরে ছেড়ে দেয়।
এর পর তাদের ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে বান্দরবানের আদালতে হাজির করার পর রামু থানায় দায়ের করা ৩টি মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
এছাড়া, তাদের আজকালের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বান্দরবান কারাগার থেকে কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে, শনিবার সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাবের সামনে বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারীদের মানববন্ধনে বক্তারা ওইদিনকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তারা অনতিবিলম্বে এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তারা যাতে ছাড়া না পায়, সেদিকে লক্ষ রাখার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।