ফাইনালে শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষ ক্রিস গেইল

ফাইনালে শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষ ক্রিস গেইল

শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে ১৫ বছর হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আছেন। তার চোখের সামনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেক ঘটনা ঘটেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে তিনি তার প্রত্যক্ষ সাক্ষীও। শুক্রবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ চার উইকেটে ২০৫ রানের যে ইনিংস খেলেছে সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বলেছেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটেবলে উৎসব করেছে’। পরে একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। ওদিকে না যাওয়াই ভালো। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ উচ্চমার্গের ক্রিকেট খেলেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ক্রিস গেইল, মার্লন স্যামুয়েলস, কিয়েরন পোলার্ডদের কাছ থেকে একটি শিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরেছেন শেন ওয়াটসন, মাইকেল হাসি এবং ডেভিড হাসিরা। টি-টোয়েন্টির বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যান ভালো ইনিংস খেলে ফেললে প্রতিপক্ষের কিছুই করার থাকে না।

গেইল বিশ্বসেরা টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান এই স্বীকৃতি দিতে কেউ কার্পণ্য করবে না। পোলার্ড যে প্রথম সারির অলরাউন্ডার তা নিয়েও কারো আপত্তি নাও থাকতে পারে। কিন্তু তারা যে প্রতিদিন জ্বলে উঠবেন সে নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। গেইলের জন্য একটি ভালো বলই যথেষ্ট।

এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত দুটি ভালো ম্যাচ খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শীর্ষ আটের শেষ ম্যাচ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সুপার ওভারে জিতেছে। সেমিফাইনালে অস্টেলিয়াকে ৭৪ রানে হারিয়েছে। এছাড়া আগে তাদের পারফরমেন্স আহামরি কিছু হয়নি। কিন্তু শ্রীলঙ্কা ধারাবাহিক একটি দল। প্রথম রাউন্ডে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষ ম্যাচটি বাদ দিলে কোন ম্যাচ হারেনি। শীর্ষ আটের তিনটি এবং সেমিফাইনাল মিলে টানা চার ম্যাচে অপরাজিত।

মাহেলা ইনফর্ম ব্যাটসম্যান। তিলকারতেœ দিলশানও ভালো ইনিংস খেলছেন। কুমার সাঙ্গাকারা আগের ইনিংসগুলো ভালো না খেললেও ফাইনালে খেলে ফেলতে পারেন। তাদের মিডল অর্ডার অনেক শক্তিশালী। লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করতে পারেন মালিঙ্গারা। বোলিংয়েও এখন পর্যন্ত খারাপ সময় আসেনি। লাসিথ মালিঙ্গা, রঙ্গনা হেরাথ, অজন্তা মেন্ডিস, জীবন মেন্ডিস, নুয়ান কুলাসেকারা ও থিসারা পেরেরা থাকবেন উইকেট শিকারের আশায়। আকিলা ধনঞ্জয়ও খেলতে পারেন। ২০ ওভারের ক্রিকেটে মালিঙ্গা ধ্বংসাত্মক বোলার। চার ওভারে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারেন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের। হ্যাট্রিক উইকেট পেলেও অবাক হবেন না। মালিঙ্গার এমন রেকর্ড আছে।

প্রেমাদাসার যে পিচে খেলা হবে তাতে স্পিনাররা সুবিধা পাবেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা অনেক বেশি শক্তিশালী। কন্ডিশন তাদের অনুকূলে থাকবেই। অতএব মাহেলা ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা দিয়ে হয়তো জিততে চেষ্টা করবেন রোববারের ফাইনাল।

অসি অধিনায়ক জর্জ বেইলি শুক্রবার বলে গেছেন গেইলকে আউট করতে পারলে শ্রীলঙ্কা চ্যাম্পিয়ন। অতএব গেইলের জন্য যে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে ফাইনালে আসবে শ্রীলঙ্কা এতে কোন সন্দেহ নেই।

অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকলেও গেইলদের ২০৫ রানের ইনিংস কিছুটা হলেও ভয় পাইয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা দলকে। ফাইনালেও এভাবে ক্যারিবীয়রা জ্বলে উঠলে চতুর্থবার বিশ্বকাপের ফাইনাল থেকে বিদায় হবে তাদের। ওই রেকর্ড তারা করতে চায় না। জিততে চায় আইসিসির দ্বিতীয় কোন বিশ্বকাপ।

১৯৯৬ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের পর তিনটি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু একটিও জিততে পারেনি। তারমধ্যে দুটি ওয়ানডে এবং একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

২০০৯ সালে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সেমিফাইনালে হারিয়ে ফাইনাল খেলেছে শ্রীলঙ্কা। এবার ফাইনাল জেতার অপেক্ষায়।

খেলাধূলা