প্রতারণার দায়ে অব্যাহতি দেওয়া গোলাম রেজা এমপিকে ঠেকাতে রাত জেগে এরশাদের বাসভবন (প্রেসিডেন্ট পার্ক) পাহারা দিয়েছে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
বহিষ্কারের পাইপলাইনে থাকা গোলাম রেজা যাতে এরশাদের বাসায় ঢুকতে না পারেন সে জন্য কড়া পাহারা বসায় নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বারিধারায় এরশাদের বাস ভবনে গেলে দেখা যায়, ছাত্র ও যুব সমাজের নেতাকর্মীদের বাসায় চারদিকে অবস্থান। এই গ্রুপের নেতৃ্ত্ব দিচ্ছেন জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটি যুগ্ম-আহ্বায়ক সৈয়দ মোহাম্মদ ইফতেখার আহসান।
এক ছাত্রনেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “শুনেছি ওই বাটপার (রেজা) এরশাদের কাছে মাফ চাইতে আসবে। তাকে ঠেকানোর জন্য বসে আছি।”
ওই নেতা আরও বলেন, “রেজা পার্টির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আজেবাজে কথা বলেছেন। সে এক সময় রাস্তার ভিক্ষুক ছিল। এরশাদ তাকে ঠাঁই দিয়ে কোটিপতি বানিয়েছে, এমপি বানিয়েছে। সে স্যারের (এরশাদ) সঙ্গে বেইমানি করেছে। তাকে প্রতিরোধ করার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আছি আমরা।”
প্রতারণার দায়ে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের হুইপ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেন এরশাদ।
এর দুই দিনের মাথায় তাকে শোকজ করা হয়। শনিবার (৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে বহিষ্কার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাত করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালাতে থাকেন। এমপি রেজা একাধিকবার ফোন দিলেও এরশাদ রিসিভ করেননি। পরে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন দিলে এরশাদ রিসিভ করেন। কিন্তু রেজার গলা বুঝতে পেরে ফোন কেটে দেন এরশাদ।
জাতীয় পার্টির মুখপত্র প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ জানান, এরশাদের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করছেন।
কাজী ফিরোজ রশিদ জানান, রেজার নম্বর থেকে কল করলে স্যার রিসিভ করেননি। পরে অন্য একটি অপরিচিত নম্বর থেকে কল দিলে স্যার (এরশাদ) রেজার গলা বুঝতে পেরে কেটে দেন।
পার্টির মহাসচিবও ফোন কেটে দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করেন।
এরপর সন্ধ্যার পর থেকেই রটে যায় রাত ৯টার পর এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সপরিবারে তার বাসায় যাচ্ছেন গোলাম রেজা।
এ বিষয়ে গোলাম রেজা এমপির সেল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি জানান, এরশাদের সঙ্গে সমস্যা মিটে গেছে। কীভাবে মিটে গেল সে বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন তিনি।
এরশাদের বাসায় যাওয়া প্রসঙ্গে রাত ১০টায় গোলাম রেজার সঙ্গে কথা হলে বলেন, “যাওয়ার কথা তো ছিল। দেখি কি হয়।”
শেষ খবর লেখা পর্যন্ত রাত ১টায় পাহারা অব্যাহত ছিল। নেতাকর্মীরা জানান তারা সারা রাত পাহারা অব্যাহত রাখবেন।
সেখানে অবস্থানকারী জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা জানান, খবর রয়েছে রাতে না এলে সকালে আসবে রেজা। তখনও তাকে প্রতিরোধ করা হবে।