ওয়ালটন কারখানায় তৈরি হচ্ছে বিশ্বের ১১টি দামি ব্রান্ডের রেফ্রিজারেটর। এখানে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে রেফ্রিজারেটর তৈরি হবে বলে জানালেন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আলম জুয়েল।
তিনি আরও জানান, বিশ্বে প্রথম শ্রেণীর কাতারে অবস্থান করছে ওয়ালটনের ফ্রিজ। ওয়ালটনের কারখানায় বর্তমানে বছরে ১৪ লাখ ফ্রিজ ও ফ্রিজার, ৩ লাখ মোটরসাইকেল, সাড়ে ৩ লাখ এয়ারকুলার এবং ৩ লাখ টিভি তৈরি হচ্ছে। ওয়ালটনের মেড ইন বাংলাদেশ লেখা পণ্য দেশের সীমা ছাড়িয়ে রফতানি হচ্ছে ১৬টি দেশে।
আশরাফুল আলম জুয়েল বলেন, “ওয়ালটনের ফ্রিজ বিশ্বের প্রথম কাতারে অবস্থান করছে। ওয়ালটনের নিজস্ব ব্রান্ড ছাড়াও মার্সেলসহ বিশ্বের ১১টি দামি ব্রান্ডের ফ্রিজ প্রস্তুত হচ্ছে ওয়ালটনের কারখানায়।”
তিনি বলেন, “ওয়ালটনের ফ্রিজের বাজার এবং চাহিদা খুব দ্রুত বাড়ছে। যে কারণে, বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রি ইউনিট-৫ নামের নতুন কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। নতুন এই কারখানাটি টেস্ট রানে (পরীক্ষামূলক উৎপাদন) রয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হবে।” সর্বাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এ কারখানায় দৈনিক ২ হাজার ২০০টি ফ্রিজ তৈরি হবে বলে জানান তিনি।
আশরাফুল আলম আরো জানান, ২০০৮ সালে তাদের উৎপাদন শুরু হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশি এই পণ্যটি বিশ্বে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ওয়ালটন ফ্রিজের শুধু কমপ্রেসার ছাড়া সব কিছুই তারা নিজেরা তৈরি করছেন। আগামী জুন নাগাদ কমপ্রেসার তৈরি সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
ওয়ালটনের ফ্রিজের বিশেষত্ব নিয়ে তিনি বলেন, “এতে এলইডি লাইট ব্যবহার করা হয়েছে যে কারণে, এ ফ্রিজ ৮০ ভাগ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এছাড়া, অন্যান্য কোম্পানির ফ্রিজে অ্যালুমিনিয়াম কনডেনসার ব্যবহার করে। সেখানে ওয়ালটন ব্যবহার করছে উন্নতমানের কপার কনডেনসার। সে কারণে কয়েক ধাপ এগিয়ে রয়েছে ওয়ালটনের ফ্রিজ।”
উল্লেখ্য, কপার কেনডেনসারের কারণে ওয়ালটনের ফ্রিজ দ্রুত ঠান্ডা হয় এবং বিদ্যুৎ চলে গেলেও দীর্ঘ সময় খাবারের মান থাকে অক্ষুণ্ন।
তিনি দাবি করেন, ওয়ালটন টিভি বিশেষ গুণে গুণান্বিত। এই টিভি সর্বোনিম্ন ভোল্টেজেও স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে। ৯০ কিলোভোল্টে ওয়ালটন টিভি যখন স্বাভাবিক ভাবে চলে সেখানে অন্যান্য বিশ্বের দামী ব্রান্ডগুলো চলতে অক্ষম।
এছাড়া, জ্বালানি সাশ্রয়ী ৯টি মডেলের মোটরসাইকেল তৈরি করছে ওয়ালটন। এর মধ্যে ৮০ থেকে ১৪০ সিসি পর্যন্ত রয়েছে।
ওয়ালটনের এমডি বলেন, “দেশপ্রেম নিয়ে পথচলা শুরু আমাদের। এখানে এখন কয়েক হাজার পার্টস তৈরি হচ্ছে। সামান্য কিছু বাইরে থেকে আসছে। ভবিষ্যতে পুরোপুরি উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা ও মানন্নোয়নের কাজ চলছে।”
তিনি জানান, তাদের সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্টে রয়েছে ৫শ প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান। দেশজুড়ে রয়েছে তাদের ২ হাজারের বেশি ডিলার ও পরিবেশক। রয়েছে কর্পোরেট সেলস বিভাগ। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ওয়ালটন প্রায় ৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে।
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের আশা, সাশ্রয়ী উৎপাদন খরচের কারণে গার্মেন্ট শিল্পের মতো ইলেক্ট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল ও অটোমোবাইল কোম্পানির পণ্যেও সামনের সারিতে স্থান করে নিতে সক্ষম হবে এ দেশীয় কোম্পানিটি।