দেশের বর্তমান পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম রাজতন্ত্র শাসিত দেশ জর্দানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ।
জর্দানের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল মুসলিম ব্রাদারহুডের আহবানে শুক্রবার সরকার বিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হলো।
পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেওয়ার ঘোষণা সম্বলিত বিবৃতিতে জানানো হয় আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বাদশাহ জর্দানের পার্লামেন্ট চেম্বার ভেঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি খুব শীঘ্রই নির্বাচনের আহবান করবেন বলে বিবৃতিতে দাবি করা হলেও এর সঠিক দিনক্ষণ উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে চলতি বছরের শেষেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেবেন বাদশাহ।
এদিকে বাদশাহের এ ঘোষণার মধ্যেই রাজধানী আম্মানের কেন্দ্রস্থলে শুক্রবার বিক্ষোভ সমাবেশ ও র্যালির আয়োজন করেছে ব্রাদারহুড। ধারণা করা হচ্ছে সেখানে লক্ষাধিক বিরোধী দলীয় সমর্থক উপস্থিত হবে। আরও অধিকতর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে শুক্রবার জুমার নামাজের পর এ র্যালি আহবান করা হয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
এদিন বাদশাহর সমর্থনে একটি পাল্টা সমাবেশ আয়োজন করা হলেও সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কায় সমাবেশটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এর আয়োজকরা।
ব্রাদারহুডসহ জর্দানের অন্যান্য রাজনৈতিক গ্রুপ ও উপজাতি নেতারা আরও অধিকতর রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য বাদশাহর প্রতি চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। পাশাপাশি গত জুলাইয়ে রাজতন্ত্র ঘনিষ্ঠ জর্দানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল তারানেহের পাশ করা একটি বিতর্কিত নির্বাচনী আইনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে বিরোধী দলগুলো। আইনটি সংস্কার করা না হলে এমনকি নির্বাচন বয়কট করারও হুমকি দিয়েছে তারা।
নতুন আইন অনুযায়ী ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভুত জর্দানি নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করা হয়েছে বলে দাবি করছে বিরোধী দলগুলো। স্থানীয় উপজাতি নাগরিকরা নতুন নির্বাচনী আইনে অধিক প্রাধান্য লাভ করবে বলে আশঙ্কা করছে তারা। এই উপজাতিরাই জর্দানের বর্তমান রাজতন্ত্র ও শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর মূল শক্তি।
আরব বসন্তের প্রভাবে গত বছরের প্রথম থেকেই থেকে গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবিতে জর্দানে অসংখ্য বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্রাদারহুড সর্তক করে দিয়ে বলেছে নির্বাচনী আইন সংস্কার না হলে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। পাশাপাশি রাষ্ট্র ও পার্লামেন্টের ওপর বাদশাহের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব অবসানেরও দাবি জানিয়ে আসছে তারা।