কেমন দেখেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং? খুব ভালো লেগেছে নিশ্চয়ই। দারুণ খেলেছে দলটি। অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের বেধড়ক পিটিয়েছে। ওহ.. খেলা না দেখলে মিস করেছেন!
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০৫/৪ (২০ ওভার)
অস্ট্রেলিয়া: ১৩১/১০ (১৬.৪ ওভার)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭৪ রানে জয়ী
ক্রিস গেইল শেষপর্যন্ত ব্যাটিংয়ে ছিলেন। তার চেয়েও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন মার্লন স্যামুয়েলস, ডুয়াইন ব্রাভো এবং কিয়েরন পোলার্ড। এই চারজনের ব্যাটিং তান্ডবে প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম রানের সুনামি হয়েছে। ২০ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান। এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় ইনিংস এটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আগে ইংল্যান্ড প্রথম রাউন্ডের খেলায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাঁচ উইকেটে তুলেছিলো ১৯৬ রান।
ক্যারিবীয় ইনিংসে ১৪টি ছয় এবং ১৩টি চারের মারও ছিলো। তাতে গেইল হাঁকিয়েছেন ছয়টি ছয় ও পাঁচটি চার, স্যামুয়েলস দুটি করে চার ও ছয়, ব্রাভো একটি চার তিনটি ছয়, পোলার্ড তিনটি চার তিনটি ছয় এবং ওপেনার চার্লসের দুটি চার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের স্কোরের ১৩৬ রান তুলেছেন চার-ছয় দিয়ে।
হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে বলগুলো দূরে কোথাও উড়ে যেতে চাচ্ছিলো। পারেনি শুধু পরের শটে তাদেরকে গেইলরা খেলবে বলে। শটগুলো দর্শকদের চোখ জুড়িয়ে দিয়েছে। মনের ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো সব শট। গেইল ৪১ বলে করেছেন ৭৫ রান। আসল চেহারাটা তিনি দেখাননি। ফাইনালের জন্য রেখে দিয়েছেন।
প্যাট কামিন্সের বলে বোল্ড হওয়ার আগে স্যামুয়েলস ২০ বলে করেছেন ২৬ রান। ব্রাভো ৩১ বলে খেলেছেন ৩৭ রানের ইনিংস। কিয়েরন পোলার্ড তিন চার তিন ছয়ে ১৫ বলে ৩৮ রানের ঝড় তুলেছেন।
এই বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে একবার খেলেছে অস্ট্রেলিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওই ম্যাচেও রান উঠেছিলো। ২০ ওভারে ১৯১ রান করেও জিততে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেন ওয়াটসনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১০ ওভারে ১০০ রান হওয়ার পর বৃষ্টি হানা দিয়েছিলো গ্রুপ ম্যাচে। পরে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতির সুবিধায় জিতেছিলো অস্ট্রেলিয়া।
‘বি’ গ্রুপ থেকে কোন ম্যাচ না জিতে শীর্ষ আটে উঠেছিলো দলটি। এ নিয়ে অনেক খোঁচাখুঁচি হয়েছে। টিপ্পনি শুনতে হয়েছে ড্যারেন স্যামিকে। প্রশ্নবাণেও জজ্জরিত হয়েছে। শীর্ষ আটেও আহামরি ক্রিকেট খেলতে পারেনি। কষ্টেশিষ্টে দুটো ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে এসেছে। ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ হিসেবে ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলে। সেমিফাইনালে আসল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পাওয়া গেলো।
২০৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার শুরুতে উইকেট হারায়। ডেভিড ওয়ার্নারকে স্যামুয়েল বাদ্রি বোল্ড আউট করেন। আরেক ওপেনার ওয়াটসনও বাদ্রির বলে বোল্ড হন। মাইক হাসি ১৮ রান তুলে স্যামুয়েলসের বলে কট এন্ড বোল্ড। ক্যামেরুন হোয়াইট পাঁচ রানে রামপালের শিকার। প্রথম চার ব্যাটসম্যানের মধ্যে জুটি হয়নি।
জর্জ বেইলি অল্প সময়ের জন্য জ্বলে উঠেন। ছয় চার ও চার ছয়ে ২৯ বলে ৬৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন। পরে আর জুটি হয়নি। ১৬.৪ ওভারে অস্ট্রেলিয়া অল-আউট ১৩১ রানে।
রবি রামপাল তিনটি, বাদ্রি, সুনিল নারিন ও পোলার্ড দুটি করে উইকেট নিয়ে ধ্বসিয়ে দিয়েছেন প্রতিপক্ষের ইনিংস। ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও দুর্দান্ত খেলেছে দলটি। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন গেইল।
রোববারের ফাইনালে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটি তাদের প্রথম ফাইনাল। ১৯৮৩ সালের পর কোন বিশ্বকাপের ফাইনালও। প্রথম দুই ওয়ানডে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দল ১৯৮৩ সালেও ফাইনালে উঠেছিলো। কপিলদেবের ভারত তাদেরকে হারিয়ে শিরোপ জেতে। ২০০৪ সালে ব্রায়ন লারার ওয়েস্ট ইন্ডিজ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিলো। এরপর আইসিসির কোন টুর্নামেন্টে ফাইনাল খেলেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।