সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যা মামলাটি চাঞ্চল্যকর বিবেচনায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
বুধবার পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মাহমুদা আফরোজ লাকি মামলাটি চাঞ্চল্যকর বিবেচনায় দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য এ সুপারিশ করেন।
বিষয়টি বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, ঢাকার আদালতের এডিসি (প্রসিকিউশন) মো. আনিসুর রহমান।
তিনি জানান, বিষয়টি শুধু চাঞ্চল্যকরই নয়, এ মামলার সুষ্ঠু বিচারের সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তিও জড়িত। তাই পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর খালাফ হত্যা মামলায় ৫ আসামিকে অভিযুক্ত করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ পরিদর্শক ওবায়দুল হক।
চার্জশিটভুক্ত ৫ আসামি হলেন, সাইফুল ইসলাম ওরফে মামুন, মো. আল আমীন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি, রফিকুল ইসলাম খোকন ও সেলিম চৌধুরী ওরফে সেলিম আহম্মেদ।
মামলাটি বিচারের জন্য মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়েছিল।
আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে মামুন, মো. আল আমীন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি ও রফিকুল ইসলাম খোকনকে এ মামলায় গত ২৪ জুলাই গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
তারা বর্তমানে কারাগারে আটক আছেন। আসামি সেলিম চৌধুরী ওরফে সেলিম আহম্মেদ পলাতক।
চার্জশিটে সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলী ছিনতাইকারীদের রিভলবারের গুলিতে নিহত হন মর্মে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৪ জুন রাজধানীর দক্ষিণখান থানার গাওয়াইর এলাকা থেকে সাইফুল ইসলাম মামুন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি, আল আমীনকে গ্রেফতার ডিবি পুলিশের ডাকাতি, দস্যুতা ও ছিনতাই প্রতিরোধ টিম।
এ সময় তাদের কাছ থেকে কালো রংয়ের একটি বিদেশি .২২ বোরের রিভলবার উদ্ধার করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে গত ৪ জুন তাদের নামে একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়।
এ মামলার রিমান্ডে থাকাকালীন তারা স্বীকার করে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর খিলক্ষেত থানার সেবা ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বাসায় আসামি সাইফুল ইসলাম মামুন, লালু, আল আমীন ও রফিকুল ইসলাম খোকন ডাকাতি করতে গিয়ে অন্যান্য মালের সঙ্গে রিভলবারটিও ডাকাতি করে নিয়ে আসেন।
আসামি সাইফুল ইসলাম মামুন ও আল আমীন আদালতে স্বীকার করে গত ৫ মার্চ দিবাগত রাতে ছিনতাই করতে গিয়ে বাধা দেওয়ায় তারা সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলীকে এ অস্ত্রটি দিয়েই গুলি করে হত্যা করেন।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, মূলত নেশার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে এক বিদেশীকে রাস্তায় দেখে ডলার পাবার আশায় তারা খালাফকে ঘিরে ধরে। এ সময় ছিনতাইকারীদের সঙ্গে খালাফের ধস্তাধস্তি হয়। এরই এক পর্যায়ে আসামি সাইফুল ইসলাম মামুন .২২ বোরের রিভলবার দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি ভাষানটেক থানার রফিকুল ইসলাম খোকনের মানিকদী বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ৫ মার্চ রাত ১টার দিকে গুলশানের কূটনীতিক এলাকার ১২০ নম্বর সডকের ১৯/বি নম্বর বাসার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খালাফ আল আলী (৪৫)। ৬ মার্চ ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে গত ৭ মার্চ গুলশান থানার এসআই মোশারফ হোসেন এ মামলাটি দায়ের করেছিলেন।