রাজশাহীতে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যে মারপিটের ঘটনায় দলের বিভাগীয় কর্মী সম্মেলন পণ্ড হয়ে গেছে। পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হালওলাদারকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। মহাসচিবের উপস্থিতিতে মঞ্চেও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন জেলা ও মহানগর নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগর ভবনের গ্রীনপ্লাজায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় দু’পক্ষের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় জেলা জাতীয় পার্টির কর্মীরা নগর জাতীয় পার্টির এক কর্মীকে মারপিট করে দিগম্বর করেন। দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিকেলে নগর ভবনের গ্রীনপ্লাজায় জাতীয় পার্টির রাজশাহী বিভাগীয় কর্মী সম্মেলন ছিল। তাতে যোগ দিতে আসেন পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। সন্ধ্যায় নগর ভবনের সামনে এসে তার গাড়ি থামে।
এ সময় জেলা জাতীয় পার্টির নেতা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ তাকে একসঙ্গে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে যান। এসময় জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে মহানগর জাপার কয়েকজন কর্মী জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন বাচ্চুকে ধাক্কা দিলে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা একে অপরের ওপর চড়াও হন। শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। এসময় সেখানে মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।
নেতাকর্মীদের হাতাহাতির এক পর্যায়ে জেলা জাপার নেতাকর্মীরা মহানগর জাপার নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হয়। এসময় মুন্না নামে মহানগর জাপার এক কর্মীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে পিটিয়ে দিগম্বর করা হয়। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে কেন্দ্রীয় মহাসচিবের সঙ্গে মহানগর জাপার আহ্বায়ক আবদুল মতিন খান, সদস্য সচিব এসএম জোহা সরকার, মহানগর যুবসংহতির আহ্বায়ক সালাউদ্দিন পিন্টুসহ বেশকয়েকজন মহানগর নেতাকর্মী মঞ্চে অবস্থান নেন।
কিন্তু সভার কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে জেলা জাপার নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে মহানগর নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হন। তাদেরকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। মঞ্চে মহাসচিবের সামনেই উভয় গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।
পরে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর পুলিশি বেষ্টনীর মধ্যে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে সেখান থেকে চলে যান। তবে এর আগে এ ঘটনাটি তদন্তের জন্য সাত সদস্যের কমিটি করার ঘোষণা দেন।
জাপা সূত্র জানায়, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য মহানগর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা নগরীর শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান চত্বরে অবস্থান নেন। কিন্তু জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মহাসচিবের সফর সঙ্গী হওয়ায় গাড়িবহর নিয়ে তিনি কামারুজ্জামান চত্বর দিয়ে প্রবেশ না করে নগরীর সাহেব বাজার হয়ে নগর ভবনের সামনে উপস্থিত হন।
এ খবর পেয়ে মহানগর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে এ ঘটনা ঘটে।