দুই মাসে আমদানি বিকল্প ফসল চাষে ৫৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ বেড়েছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া নানা পদক্ষেপের কারণে সুদ ভর্তুকির আওতায় আমদানি বিকল্প ফসলে ঋণ বিতরণ বাড়ছে। চলতি (২০১২-১৩) অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ব্যাংকগুলো ৪ শতাংশ সুদে এ খাতে বিতরণ করেছে প্রায় ৩১ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে বিতরণ করা হয়েছিল ২০ লাখ টাকা। এ হিসেবে একই সময়ের তুলনায় বিতরণ বেড়েছে প্রায় ৫৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ও আর্থিক সেবাভূক্তি বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চার শতাংশ রেয়াতি সুদে মসলা, তৈলবীজসহ আমদানি করতে হয় এমন পণ্য চাষে এ ঋণ দেওয়া হয়। সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশি মালিকানায় পরিচালিত ২৬ বাণিজ্যিক ব্যাংক এ ঋণ বিতরণ করে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, আমদানি বিকল্প ফসলের আওতায় বিভিন্ন ধরনের মসলা, ডাল, তেলবীজ ও ভুট্টা চাষে ব্যাংকগুলোর জন্য চলতি অর্থবছর ৮৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জুলাই-আগস্ট সময়ে বিতরণ করা হয়েছে ৩০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। গত অর্থবছরে ৭৮ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে একই সময়ে বিতরণ করা হয়েছিল ২০ লাখ টাকা।
এ সময়ে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। বিদেশি ব্যাংকগুলো দিয়েছে ১০ লাখ টাকা।
এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানার জনতা ব্যাংক ২ লাখ ৫ হাজার, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ২ লাখ ৮৫ হাজার এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বিতরণ করেছে ৫০ হাজার টাকা।
বিগত ২০১১-১২ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো এ খাতে মোট ৮১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করে।
ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক নির্মল চন্দ্র ভক্ত বাসসকে জানান, ‘২০১০ সালের শেষ দিকে পেয়াঁজ রসুন, মরিচ, আদাসহ সব ধরনের মসলা জাতীয় নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে যায়। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এসব খাতে কৃষকদেরকে ঋণ দিয়ে মসলা জাতীয় ফসল চাষে উৎসাহী করে তোলা হবে। আমাদের সে পদক্ষেপ কাজে এসেছে।’
তিনি বলেন, প্রথমে শুধু রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো এ খাতে ঋণ বিতরণ করলেও গত অর্থবছর থেকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও এ খাতে ঋণ বিতরণ শুরু করেছে। এর পাশাপাশি এ খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর ফলে আমদানি বিকল্প ফসল চাষে ঋণ বিতরণ বাড়ছে।
আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের জন্য সরকারের সুদ ক্ষতিপূরণ সুবিধার আওতায় ডাল জাতীয় ফসল মাষকলাই, মুগ, মসুর, খেসারি, ছোলা, মটর ও অড়হর; তেলবীজ জাতীয় ফসল সরিষা, তিল, তিসি, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী ও সয়াবিন; মসলা জাতীয় ফসলথ হলুদ, আদা, রসুন, পেঁয়াজ ও ধনিয়া এবং ভুট্টা চাষে এ ঋণ দেওয়া হয়।
গ্রাহক পর্যায়ে ব্যাংকগুলো ৪ শতাংশ সুদ নেয়। বাকি ৬ শতাংশ দেয় সরকার। এতে ব্যাংক মোট ১০ শতাংশ সুদ পায়। সে ক্ষেত্রে সুদ ক্ষতি বাবদ প্রদত্ত ছয় শতাংশ হিসেবে নেয়ার পরও কোনো ব্যাংকের কিছুটা সুদ ক্ষতি হলে ওই অংশটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটির (সিএসআর) আওতায় গণ্য করা হয়।

অর্থ বাণিজ্য