নিজেদের মধ্যে গোলমাল করে বাইরের শক্তিকে মুনাফা না দিতে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন: কি এবং কীভাবে’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
আমু বলেন, “জেদাজেদি করে রাজনীতি করা যাবে না। এই প্রবণতা রাখলে দেশের ক্ষতি হবে। বাইরের শক্তিগুলো মুনাফা নেবে। তাই সবাইকে জাতীয় ঐক্যে আসা উচিত।”
তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে, সেটার প্রেক্ষাপট কি তা বুঝতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নয়। সংবিধানে সামরিক শাসন ব্যবস্থার কোনো স্থান নেই। বর্তমান সরকারের আমলে নির্বাচন নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই।”
আমু বলেন, “অগণতান্ত্রিক পন্থা দীর্ঘদিন চলতে পারে না। বিশ্বের কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এ ব্যবস্থা নেই।” বিগত ওয়ান ইলেভেন সরকারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “এ সরকারের রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের লোকজন ছিল তাদের পছন্দের।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার বলেন, “ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় নিয়ে যদি রিভিউ করতে হয়, যারা এটার সুফল পাবে তাদেরই করা উচিত। পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে মাত্য আটটি অনুচ্ছেদ বাদ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩২টি অনুচ্ছেদই রয়ে গেছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বিএনপির আপত্তি নেই। তবে তা হতে হবে নিরপেক্ষ। দলীয় প্রধানমন্ত্রী রেখে হবে না।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “যেহেতু আপনারা বাতিল করেছেন, তাই আপনাদেরই প্রস্তাব দিতে হবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনেন বলেন, “আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা বিজয় অর্জন করি কিন্তু ধরে রাখতে পারি না।”
ত্রয়োদশ সংশোধনী সম্পর্কে বিরোধী দলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “রায়ের সঙ্গে দ্বিমত থাকতে পারে কিন্তু সংবিধানে বিশ্বাস থাকলে তা মানি না এটা বলা যাবে না।”
পাকিস্তানের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “পাকিস্তানকে আমরা অকার্যকর ব্যর্থ রাষ্ট্র বলি। কিন্তু সেখানেও আইন মানতে হয়।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, “৫৪ সনের ইলেকশন ছাড়া এদেশে কোনো ইলেকশনই ফেয়ার হয়নি। নির্বাচন কশিমনের ভালো যা যা কিছু হয়েছে, তা তত্ত্বাবাধায়কের আমলেই হয়েছে।
মাহমুদুর রহমান মান্না দুই নেত্রীর সমালোচনা করে বলেন, “সমগ্র জাতির দুই নেত্রীর কাছে বাধা পড়ে গেলাম কেন, তাদেরকে অনুনয় বিনয় করতে হবে কেন, তারা তো অবুঝ নন। যতদিন জনগণের ক্ষমতায়ন না হবে, ততদিন এসব সঙ্কট থেকে পরিত্রাণের উপায় নেই।”
আলোচনা সভার আয়োজন করে ফেমা। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক তরিকুল গণির সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সভাপতি মুনিরা খান।