সরকারি চাকরিজীবীদের এসিআর নির্দিষ্ট সময়ে না দিলে শাস্তি

সরকারি চাকরিজীবীদের এসিআর নির্দিষ্ট সময়ে না দিলে শাস্তি

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন (এসিআর) নির্ধারিত সময়ে জমা না দিলে বিভাগীয় ব্যবস্থার শাস্তি দেওয়া হবে।

রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বার্ষিক গোপন প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয় সংক্রান্ত্র এসিআর অনুশাসনমালা জারি করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবদুস সোবহান সিকদার স্বাক্ষরিত অনুশাসনমালায় বলা হয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এসিআর জমা না দেওয়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, অনুবেদনকারী কর্মকর্তা এবং প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তার অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করা হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
করে এ অনুশাসনমালা প্রস্তুত করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এসিআর জমা না দেওয়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, অনুবেদনকারী কর্মকর্তা এবং প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তার অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করা হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

বছর শেষে পরবর্তী বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তার নিজস্ব কর্মকা-ের মূল্যায়ণের জন্য একটি বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন (এসিআর) তৈরি করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

প্রতিবেদন তৈরির পর তা নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা বা অনুবেদনকারী কর্মকর্তার স্বাক্ষরের জন্য জমা দেবেন। অনুবেদনকারী কর্মকর্তা স্বাক্ষর করে পরবর্তী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তার কাছে জমা দেবেন। প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তা ৩১ মার্চের মধ্যে নথিপত্র স্বাক্ষরের মাধ্যমে সিলগালা করা খামে গোপনীয় এ অনুবেদন সংরক্ষণকারী কর্তৃপক্ষ বা ডোসিয়ারের দপ্তরে পাঠাবেন।

এ ক্ষেত্রে কোন কর্মকর্তা নির্দিষ্ট সময়ের এক বছরের বেশি সময় পরে তার বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন জমা দিলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। এ ধরনের অনুবেদনে অনুবেদনকারী কর্মকর্তা বা প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তার স্বাক্ষর দেওয়া যাবে না। দেরিতে অনুবেদন জমা দেওয়া কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের দায়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

অপরদিকে নির্দিষ্ট সময়ে অনুবেদন জমা দেওয়ার পরও অনুবেদনকারী বা প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তা অনুবেদনের নথি এক বছরের বেশি সময় পরে সংরক্ষণকারী কর্মকর্তার (ডোসিয়ার) দপ্তরে পাঠালে, এরজন্য এসিআর জমাকারী কর্মকর্তার কোন দায় থাকবে না। এক্ষেত্রে তাকে দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে গড় নম্বর দিতে হবে।

বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন ঘষামাজা, কাটাছেড়া বা ফ্লুইড ব্যবহার করা যাবে না। তবে জরুরি প্রয়োজনে একটানে কেটে সংশোধনের পর সেখানে অনুস্বাক্ষর দিতে হবে।

কোন কর্মস্থলে কোন কর্মকর্তা কমপক্ষে তিনমাস দায়িত্ব পালন করলে, ওই কর্মস্থলে তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ তার অনুবেদন স্বাক্ষর করতে এবং ডোসিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে পারবেন।

অনুশাসনমালা অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম-সচিবদের অনুবেদনকারী কর্তৃপক্ষ হবেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী। এক্ষেত্রে অনুবেদনের নথিপত্রে কোন প্রতিস্বাক্ষরের প্রয়োজন হবে না।

সাধারণভাবে অতিরিক্ত সচিবের অনুবেদনের সচিব ও ভারপ্রাপ্ত সচিব অনুবেদনকারী এবং মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

যুগ্ম-সচিবের ক্ষেত্রে সচিব, ভারপ্রাপ্ত সচিব ও অতিরিক্ত সচিব অনুবেদনকারী এবং মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা সচিব ও ভারপ্রাপ্ত সচিব প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

উপসচিবের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম-সচিব অনুবেদনকারী এবং সচিব ও অতিরিক্ত সচিব প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। সিনিয়র সহকারী সচিব এবং সহকারী সচিবদের ক্ষেত্রে উপসচিব অনুবেদনকারী এবং অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম-সচিব প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

সিনিয়র সহকারী প্রধান, সহকারী প্রধান এবং গবেষণা কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে উপসচিব বা উপ-প্রধান অনুবেদনকারী এবং অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম-সচিব বা যুগ্ম-প্রধান প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

বিভাগীয় কমিশনারদের অনুবেদনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব অনুবেদনকারী কর্মকর্তা হবেন। এক্ষেত্রে অনুবেদন প্রতিস্বাক্ষরের প্রয়োজন হবে না। জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) অনুবেদনে বিভাগীয় কমিশনার অনুবেদনকারী এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রতিস্বাক্ষর করবেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকরা অনুবেদনকারী এবং বিভাগীয় কমিশনার প্রতিস্বাক্ষরকারীর দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যক্ষেত্রে নিজ নিজ নিয়ন্ত্রণকারী ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই এসব দায়িত্ব পালন করবেন।

গোপনীয় অনুবেদনের ফরমের মূল্যায়নের বিষয়ে কোন অংশের বিপরীতে প্রাপ্ত নম্বর এক এর ঘরে থাকলে তা বিরূপ বলে গণ্য হবে। মোট প্রাপ্ত নম্বর ৪০ বা তার নিচে হলে তাও বিরূপ হিসেবে গণ্য হবে। তবে এক্ষেত্রে তথ্য প্রমাণ সংযুক্ত করতে হবে।

বাংলাদেশ