জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহারের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে সমগ্র নাইজেরিয়া । সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের প্রথম দিন সোমবার সমগ্র নাইজেরিয়ার দোকানপাট স্কুল কলেজ এবং পেট্রোল পাম্পগুলো বন্ধ ছিল।
দেশটির প্রধান নগরী লাগোসসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরে হাজারো জনতা জ্বালানি তেলের ওপর ভর্তুকি বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে এসময় নিরাপত্তাবাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানায় সংবাদ মাধ্যম।
এসময় প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশের গুলি বর্ষণে কমপক্ষে এক জন নিহত হয় বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ধর্মঘটের প্রথম দিনে দেশটির প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র লাগোসের মানুষের পদভারে ব্যস্ত রাস্তাগুলো এখন অনেকটাই নীরব। নগরীর স্থানে স্থানে জনতা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে । প্রায় সমগ্র শহর জুড়ে পুলিশের উপস্থিতি চোখে পড়েছে।
এসময় বিক্ষোভ মিছিলে সমবেত হাজারো জনতা শ্লোগানে ও সঙ্গীতে সরকারের নীতির প্রতিবাদ জানাচ্ছিল। তারা ভর্তুকি প্রত্যাহারের সরকারি সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণভাবে বেআইনি বলেও দাবি করে। এ সময় অনেক বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথনের ব্যঙ্গচিত্রে ‘ব্যাডলাক জোনাথন’ লিখে প্রতিবাদ জানায়।
এছাড়া দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর কানোতে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও পিটুনিতে অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারী আহত হয় বলে জানায় সংবাদ মাধ্যম।
রাজধানী আবুজাতে বিক্ষোভকারীরা বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয় ও প্রতিবাদী তরুণরা রাজধানীর কেন্দ্রস্থলের ইগল স্কোয়ারে অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ তাদেরকে সেখান থেকে হটিয়ে দেয়।
দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর কাদুনাতে ধর্মঘটে প্রায় সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় । এছাড়া দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইলোরিনও ধর্মঘটে সম্পূর্ণ ভাবে স্তব্ধ হয়ে যায় বলে জানায় সংবাদ মাধ্যম।
ভর্তুকি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে সর্মথন করে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথন বলেন জ্বালানি তেলের ভর্তুকি অব্যাহত রাখা বর্তমানে অর্থনৈতিক ভাবে অসম্ভব ।
এদিকে প্রতিবাদ বিক্ষোভে জনগনের অংশগ্রহন ক্রমাগত বাড়ছে বলে জানায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম। দেশটির শ্রমিক ইউনিয়নগুলো জানায় তাদের ডাকা ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে।
দেশটির উত্তরাঞ্চলে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা জঙ্গী গোষ্ঠী বোকো হারাম সঙ্কটে গলদঘর্ম দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথন সাম্প্রতিক সময়ের জ্বালানি বিক্ষোভের ফলে আরও গভীর সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।