অনেক নাটকের পর প্রত্যাশিত শর্ত পূরণ হওয়ায় অবশেষে পদ্মাসেতুর জন্য ১২০ কোটি ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকালে এ কথা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে গত ২৯ জুন পদ্মাসেতুর জন্য প্রতিশ্রুত ঋণ প্রত্যাহার করে বিশ্বব্যাংক যে ঘোষণা দিয়েছিলো, তা বাতিল হলো। সরকারের সংশ্লিষ্ট দুই উর্ধ্বতনের বিরুদ্ধে পদ্মাসেতুর কাজে দুর্নীতির সম্পৃক্ততা পাওয়ায় এই ঋণ সহায়তা প্রত্যাহার করে বিশ্বব্যাংক। পরে বাংলাদেশ সরকার এ জন্য প্রয়োজনীয় সব শর্ত মেনে নেওয়ার পরই বিশ্বব্যাংক আবারও সেতুর অর্থায়নে রাজি হয়।
ব্যাংকের কমিউনিকেশন অ্যাসোসিয়েট কেইটলিন বার্কজিক বিবৃতিটি প্রকাশ করেন। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সকল প্রত্যাশিত শর্ত মেনে নেওয়ার পর এবং বিশ্বব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সার্বিক সহায়তায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সঙ্গে নতুনভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে গত ২৯ জুন পদ্মাসেতুর জন্য প্রতিশ্রুত অর্থ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পেছনে যেসব কারণ ছিলো তা উল্লেখ করে সেগুলো থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া শর্তসমূহও তুলে ধরা হয়। শর্তগুলো পূরণে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উল্লেখ করে এতে বলা হয়, বাংলাদেশ শর্তগুলো পূরণ করে বিশ্বব্যাংকের কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানায় এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, পদ্মাসেতুতে ১২০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থায়নের বিষয়টি এ বছরের ২৯ জুন বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। এর আগে পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পায় ব্যাংকের অনুসন্ধানী দল। বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয় এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হলেও ব্যর্থ হয়। বিশ্বব্যাংক যেসব বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে পদক্ষেপ নিতে বলেছিল- ১. পদ্মাসেতুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের সরিয়ে রাখতে হবে। ২. একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে যারা বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের অধীনে কাজ করবে। ৩. আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি একটি বহিরাগত প্যানেলকে তদন্তের সব ধরনের তথ্য দিতে হবে যাতে তারা পুরো বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ দিতে পারে। এবং ৪. বিশ্বব্যাংক ও অর্থায়নকারী অন্য সংস্থার বিস্তারিত পর্যবেক্ষণের স্বার্থে ব্যবস্থা বাস্তবায়নে সম্মত হতে হবে।