মার্জিন ঋণের সুদ মওকুফ সুবিধা ও প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে যে সকল বিনিয়োগকারী কোটা পাবেন তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি।
এ তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারাই মার্জিন ঋণের সুদ মওকুফ সুবিধা পাবেন এবং আইপিওতে কোটা সুবিধা পাবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ হয়।
প্রকাশিত তথ্যমতে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো মিলিয়ে মোট ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ৮৩জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ডিএসই ২০৮টি ব্রোকারেজ হাউজের মধ্যে ১৪ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮জন বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর তালিকায় রয়েছে। এর মধ্যে মার্জিন ঋণ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৫১ হাজার ৬৮০ জন।
আর মার্জিন ঋণ না নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর তালিকায় রয়েছেন ৬ লাখ ৯৪ হাজার ২৩৪জন।
এদিকে, সিএসই’ন ৭৯টি ব্রোকারেজ হাউজে বিনিয়োগ করেন এমন ক্ষুদ্র ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর তালিকায় রয়েছেন এক লাখ ৬৬ হাজার ৪৪৩ জন।
মার্জিণ ঋণ নিয়েছেন এমন বিনিয়োগকারীর তালিকায় রয়েছেন ৪৯ হাজার ৪২ জন। আর মার্জিন ঋণ না নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন বিনিয়োগকারীর তালিকায় রয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৪০১ জন।
আর ৫০টি মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যে তহবিল ব্যবস্থাপনাকারী ২৮টি মার্চেন্ট ব্যাংকের ৪১ হাজার ৪৯২ জন বিনিয়োগকারী রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর তালিকায়।
এর মধ্যে মার্জিন ঋণ নিয়েছেন এমন বিনিয়োগকারীর তালিকায় রয়েছেন ৩৮ হাজার ৯৪৬ জন। আর মার্জিন ঋণ না নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন বিনিয়োগকারীর তালিকায় রয়েছেন ২ হাজার ৫৪৬ জন।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ডিএসই’র ৭৬টি ব্রোকারেজ হাউসকে বিশেষ স্কিমের আওতায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে মার্জিন ঋণের ৫০ শতাংশ সুদ মওকুফ করতে প্রতিষ্ঠানগুলির ব্যয় হবে ৪৪৪ কোটি ৫৯ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এদিকে, সিএসই’র ২৭টি প্রতিষ্ঠানকে মার্জিন ঋণের ৫০ শতাংশ সুদ মওকুফ করতে ব্যয় হবে ৬৮ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে দ্বিতীয় দফায় পুঁজিবাজারে ধস নেমে আসে এ ধস মোকাবেলায় বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি। গত বছরের ২১ নভেম্বর ঘোষিত ওই প্যাকেজের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফায়েকুজ্জামানকে প্রধান করে বিশেষ স্কিম কমিটি গঠন করে সরকার। এ কমিটির দেওয়া সুপারিশ অনুসারে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এসইসি’র দেওয়া নির্দেশনায় প্রত্যেক ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ১৪ আগস্টের মধ্যে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ৫০ শতাংশ সুদ মওকুফ করতে নির্দেশ দেয়।
নির্দেশনা অনুসারে নির্ধারিত সময়ে ক্ষতিপূরণ দিতে অসম্মতি জানিয়ে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন জানায় বেশ কিছু ব্রোকারেজ হাউজ। এছাড়াও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজও আবেদন জানান। প্রতিষ্ঠানগুলোর তিন মাস সময় বাড়ানোর আবেদনের প্রেক্ষিতে দেড় মাস সময় বাড়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সে হিসেবে চলতি মাসের ৩০ তারিখ ক্ষতিপূরণ প্রদানে এসইসি’র বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হচ্ছে।