হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে সোনালী ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জড়িত বলে মনে করছেন ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শ্যামল কান্তি নাথ।
বুধবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার (সাবেক শেরাটন) কর্মকর্তারা না জেনে না বুঝে এতো বড় ভুল করছেন বলে মনে হয় না।’’
তিনি বলেন, ‘‘মে মাসে আমরা পত্রিকায় এ অনিয়মের (হলমার্ক কেলেঙ্কারি) বিষয়টি দেখতে পাই। এরপর সোনালী ব্যাংকের ৩ সদস্যের ভিজিল্যান্স অ্যান্ড কন্ট্রোল টিম গঠিত হয়। আমিও ওই টিমের একজন সদস্য ছিলাম। ঘটনার তদন্তে রূপসী বাংলা শাখায় গিয়ে অনিয়মের বিষয়টি আমাদের কাছে ধরা পড়ে। অনিয়মের বিষয়টি দেখতে পেয়ে আমরা ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখাকে ব্যবস্থা নিতে বলি।’’
উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা এ কেলেঙ্কারিতে জড়িত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তলবে বুধবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে ১১টার মধ্যে সেগুনবাগিচাস্থ প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়েছেন সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের দুই উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ও তিন সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) ।
সোনালী ব্যাংকের এ ৫ উর্ধতন কর্মকর্তা হচ্ছেন- উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নেছার আহমেদ, মুরশেদ আলম খন্দকার এবং সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শ্যামল কান্তি নাথ, আবদুল মোমিন পাটোয়ারি ও শামীম আখতার।
বেলা আড়াইটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এজিএম শ্যামল কান্তি নাথ ও আবদুল মোমিন পাটোয়ারির জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন হয়েছে। ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা জড়িত কিনা তা জানার জন্য সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
বুধবার বেলা ১১টা থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।
দুদকের জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক মীর জয়নুল আবেদিন শিবলীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের তদন্ত দল তাদের পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদক মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ৪৯ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদ ও চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ, সোনালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) হেদায়েত উল্লাহ, সবিতা সিরাজ, ব্যবস্থাপক (এজিএম) গোলাম নবী মল্লিক, আশরাফ আলী পাটোয়ারী এবং জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদ উদ্দিন আহমেদ, মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মীর মহিদুর রহমান ও ননী গোপাল নাথ এবং রূপসী বাংলা হোটেল শাখায় কর্মরত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিহির চন্দ্র মজুমদার, কর্মকর্তা সাইদুর রহমান ও ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, হলমার্কসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ঋণের নামে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা (হোটেল শেরাটন) শাখা থেকে ৩ হাজার ৬শ’ ৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে হলমার্ক একাই দুই হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেয়। পরে এ ব্যাপারে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।