মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (স.) ব্যঙ্গ করে চলচ্চিত্র নির্মাণ করায় লেবাননে নতুন করে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে দেশটিতে সক্রিয় কট্টরপন্থি শিয়া মুসলিম দল হিজবুল্লাহ।
সোমবার হিজবুল্লাহ’র নিজস্ব টেলিভিশন আল-মানারে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় সংগঠনটির নেতা শেখ হাসান নাসরুল্লাহ এই বিক্ষোভের ডাক দেন। আসছে সপ্তাহগুলোতে বিশ্ববাসী এর প্রমাণ পাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তবে হিজুবুল্লাহর ডাকে সোমবার দুপুরের পর দক্ষিণ লেবাননের বৈরুতে হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এ ধরনের প্রথম বিক্ষোভটি অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি এসময় আরো বলেন, মুসলমানরা এই অবমাননার জন্য চুপ থাকতে পারে না। তিনি এই চলচ্চিত্রটির নির্মাতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করেন।
নাসরুল্লাহ জানান, তিনি এ ব্যাপারে মুখ খোলার আগে লেবাননে পোপ’র তিনদিনের সফর শেষের হওয়ার অপেক্ষা করেন।
উল্লেখ্য, অবমাননাকর সিনেমার প্রতিবাদে এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দূতাবাসে বিক্ষোভকারীরা হামলা চলিয়েছে। অবমাননাকর এই চলচ্চিত্রের জন্য বিশ্বজুডে মুসলিম দেশগুলোতে যখন মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভ চলছে ঠিক তখন নাসরুল্লাহ লেবাননে এই বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছেন।
নাসরুল্লাহর মতে, এই ভিডিও চলচ্চিত্রটি ইসলামের ওপর এযাতকালের সবচেয়ে অবমাননাকর, এটি সালমান রুশদির গ্রন্থ স্যাটানিক ভার্সেস আর ডেনিশ পত্রিকায় ২০০৫ সালে প্রকাশিত ব্যঙগ কার্টুনের চেয়েও মারাত্মক।
প্রসঙ্গত, মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.) হেয় করার ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় বেনগাজী নগরীর মার্কিন কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে এতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় কনস্যুলেট ভবনে থাকা মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও অপর তিন দূতাবাসকর্মী নিহত হন। অপরদিকে, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, মহানবীকে (সা.) ব্যঙ্গ করে চলচ্চিত্র বানানোর প্রতিবাদে গত শুক্রবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে শুরু করে আরববিশ্ব, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ মিলিয়ে কমপক্ষে ২০টি দেশে মার্কিনবিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ১১ বিক্ষোভকারী প্রাণ হারান। এছাড়া আহত হয়েছেন পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ শত শত বিক্ষোভকারী।
এদিকে, নাসরুল্লা মহানবীকে ব্যঙ্গ করে অবমাননাকর ভিডিও চিত্র নির্মানের পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেন। পাশাপাশি যারা এতে সহযোগিতা করেছেন এবং এর রক্ষাণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছেন তাদেরকে বয়কটের আহ্বান জানান।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো লেবাননেও মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। আর বিক্ষোভে অংশ নেয়া বেশিরভাগ বিক্ষোভকারী ত্রিপোলি থেকে আসা সুন্নি মুসলিম বলে জানা যায়।