এটাও ঠিক সেটাও ঠিক : সুরঞ্জিত

এটাও ঠিক সেটাও ঠিক : সুরঞ্জিত

আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয় ’৭২ এর সংবিধান ঠিক নাকি এখনকার সংবিধান ঠিক— তাহলে বলব, এটাও ঠিক সেটাও ঠিক। একথা বলেছেন দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এছাড়া বিচারপতিদের ইমপিচ করার ক্ষমতা সংসদের হাতেই থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাউথ এশিয়ান ল ইয়ার্স ফোরামের উদ্যোগে ‘আইন ও মানবাধিকার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

“জনপ্রতিনিধির হাতেই এই ক্ষমতা থাকা উচিত“ —এ-মন্তব্য করে তিনি বলেন, “৭২-এর সংবিধানকে পরিবর্তন করে বিচার বিভাগকে ইমপিচ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু আমরা তো তার নজির দেখতে পাইনি। এখন  ভিআইপি আসামির জন্য ভিআইপি উকিল ও ভিআইপ কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।“

তিনি বলে, “দেশের বেশিরভাগ মানুষ এখনও বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে বিচার বিভাগকে। এ জন্য বিচার ব্যবস্থাকে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।“

তিনি বলেন, “সভ্য ও গণতান্ত্রিক সমাজ তৈরি করতে হলে গুম, হত্যা ও বন্দুকযুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।“

গুম ক্রসফায়ার প্রসঙ্গে সরকারের সমালোচনার জবাবে বলেন, “এমনতো নয় যে, ক্রসফায়ার আজকে শুরু হয়েছে! তবে যত দ্রুত এ থেকে বের হয়ে আসা যায় ততই মঙ্গল।“

সুরঞ্জিত বলেন, “ আমরা ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছি। তবে রাতারাতি আমেরিকা হয়ে যাব এমনটা আশা করাও ঠিক না।“

‘হলমার্ক নিয়ে জনগণ প্রশ্ন তুলেছে, সরকারও বলেছে এর বিচার হবে’ উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেস হতেই হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মানবাধিকার প্রশ্নে দপ্তরহীন এই মন্ত্রী বলেন, “বইয়ে লেখা থাকলেই সব হয় না। পৃথিবীর দু’টি দেশে সংবিধানে মানবাধিকারকে নিশ্চিত করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি আমেরিকা (যুক্তরাষ্ট), অপরটি হচ্ছে বাংলাদেশ।কিন্তু দারিদ্র, অশিক্ষা, কোন্দল, ঝগড়াঝাটি— যে কারণেই হোক মানবাধিকার ইউরোপীয় মানে পৌঁছাতে পারেনি। এখনও দুর্বল ও দরিদ্র মানুষ বিচার বিভাগের সুবিধা নিতে পারছে না। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।“

“সরকার দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে“ বলে দাবি করেন সুরঞ্জিত।  এসময় বিএনপিনেতা মওদুদ আহমদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “তিনি (মওদুদ) দুর্নীতি দমন কমিশনকে অথর্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিলেন। দু’জন বুদ্ধিজীবীকে সেখানে বসিয়েছিলেন। তারা কার চেয়ার বড় হবে সেই প্রতিযোগিতা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।“

এ প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত আরো বলেন, “এখন মামলা করতে হলে সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হয় না। দুর্নীতি দমন কমিশন চাইলেই মন্ত্রীকে তলব করতে পারছে। এটা বর্তমান সরকারের উদার মানসিকতার কারণেই সম্ভব হয়েছে।“

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শেখ সালউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল বাসেত মজুমদার, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না, সুপ্রিম কোটের সিনিয়র আইনজীবী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।

রাজনীতি