হলমার্ক কেলেংকারির ৩৯ হোতার ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখার নির্দেশ

হলমার্ক কেলেংকারির ৩৯ হোতার ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখার নির্দেশ

সোনালী ব্যাংকের রূপসীবাংলা শাখা থেকে অর্থ জালিয়াতিতে জড়িত সন্দেহে সোনালী ব্যাংকের ৩৯ কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে রোববার রাতে তফসিলি ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের এই চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ থেকে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের হিসাবের লেনদেনের বিবরণী পাঠাতে বলা হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তের স্বার্থে তাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে।

যাদের হিসাবতথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে তারা হলেন- সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হুমায়ুন কবির, তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা এ.কে.এম আজিজুর রহমান (ডিজিএম), উপ-ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল হাসান (এজিএম), নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন, সিনিয়র অফিসার মিহির চন্দ্র মজুমদার, উজ্জ্বল কিশোর ধর, মো. ওয়াহিদুজ্জামান, কর্মকর্তা মো. উকিল উদ্দিন আহম্মেদ ও মো. সাইদুর রহমান। এছাড়া শেরাটন শাখা নিয়ন্ত্রণকারী জিএম অফিসের দায়িত্বে থাকা জিএম মীর মহিদুর রহমান ও ননী গাপাল নাথ, উপ-মহাব্যবস্থাপক আনম হেদায়েত উল্লাহ ও সবিতা সিরাজ, সহকারী-মহাব্যবস্থাপক গোলাম নবী মল্লিক ও আশরাফ আলী পাটোয়ারি এবং সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদ উদ্দিন আহমেদের নাম এসেছে।

অন্যদিকে ঘটনার সময় প্রধান কার্যালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অর্থায়ন, ভিজিলেন্স অ্যান্ড কন্ট্রোল বিভাগের দায়িত্বে থাকা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফখরুল ইসলাম (বর্তমানে বেসিক ব্যাংকের এমডি), মো. আতিকুর রহমান ও মো. মইনুল ইসলাম (বর্তমানে ওএসডি), মহাব্যবস্থাপক নওশের আলী খোন্দকার ও মো. মাহবুবুল হক, উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. মুছা ও শেখ আলতাফ হোসেন, সহকারী-মহাব্যবস্থাপক মো. সফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং জে্যষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেনের নামও উল্লেখ রয়েছে।

প্রধান কার্যালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগের দায়িত্বে থাকা উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুশতাক আহমেদ ও মাইনুল হক, মহাব্যবস্থাপক মাসরুল হুদা সিরাজী, মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও আলী হোসেন খান, উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. আহসান উল্লাহ ও আজিজুনাহার, সহকারী মহাব্যবস্থাপক বিজন কুমার পাল, আবুল বাশার মিজি দেলেয়ার হোসেন আব্বাসী ও আনোয়ার হোসেন খান। এছাড়া প্রধান কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. মোরশেদ আলম খোন্দকার, এজিএম আব্দুল মোমিন পাটোয়ারি, শ্রীমল কান্তি নাথ ও মো. শাহজাহানের ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার কিছু কর্মকর্তার জোগসাজসে তিন হাজার ৬০৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় হলমার্ক গ্রুপসহ ছয়টি ব্যবসায়ী গ্রুপ। এরমধ্যে শুধুমাত্র হলমার্ক গ্রুপই দুই হাজার ৬৬৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা অবৈধভাবে তুলে নিয়েছে। দেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গত ২৬ আগস্ট দুদককে অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবীরসহ ৩২ কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিষ্কার করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দেয় সোনালী ব্যাংককে। এসব কর্মকর্তার মধ্যে ২০ জনকে সাময়িক বহিষ্কার ও চারজনকে ওএসডি করা হয়েছে। এছাড়া বাকী ৭ জন অবসরে গেছেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সোনালী ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক বিভাগ শাখা।

অর্থ বাণিজ্য