মন্ত্রিসভায় যোগদানের জন্য সবাইকে যথাযথভাবেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এক্ষেত্রে নিয়মের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মহাজোট নেতা রাশেদ খান মেননের অভিযোগ খণ্ডন করে এ দাবি করেন।
রাশেদ খান মেননকে মন্ত্রী হতে শপথ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি শপথ নেননি। শুক্রবার তিনি মিট দ্য রিপোর্টার্সে তিনি অভিযোগ করেন, তাকে মন্ত্রিসভায় যোগদানের প্রস্তাব সম্মানজনক হয়নি।
কিন্তু মেননের সে অভিযোগ নাকচ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আগে যেভাবে মন্ত্রিসভায় শপথ গ্রহণের জন্য ডাকা হতো, এবারও সেভাবেই ডাকা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। ২০০৯ সালে আমরা যখন মন্ত্রিসভা গঠন করি, সে সময় পত্রিকায় দেখেছি, সাংবাদিকরা ওনাকে (মেনন) জিজ্ঞাসা করেছেন— মন্ত্রী হচ্ছেন কি-না, তখন উনি নিজেই বলেছিলেন, এখনও কেবিনেট সচিবের ফোন পাইনি।”
প্রধানমন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আইকে গুজরালের অটোবায়োগ্রাফি পড়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, “আইকে গুজরাল তার জীবনীতে লিখেছেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের আমন্ত্রণেই তিনি শপথ নিয়েছিলেন। একজন নেতা অভিযোগ করেছেন, কোনো সভ্য দেশে এভাবে ডাকা হয় না। তাহলে কি ভারত সভ্য দেশ না?”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভার শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
হাসিনা বলেন, “আমরা জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা উন্নতি করতে পেরেছি। খেটে খাওয়া মানুষের উন্নতি করা নিয়ে আমাদের কাজ। তারা ভালো আছে। কিন্তু যারা আমাদের সরকারের সমালোচনা করছেন, তারা সাধারণ মানুষের ভালো চায় না।”
প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, “আমাদের সরকারের সাড়ে তিন বছরে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। মন্ত্রিসভার রি-শাফল করা হয়েছে এটা রুটিন ওয়ার্ক।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সংসদ সদস্যের সংখ্যা বিশাল। সবাইকে মন্ত্রিসভায় নেয়া সম্ভব না। যেভাবে যতটুকু করা যায়, করে যাচ্ছি। গণতন্ত্র ছাড়া কেউ উন্নতি করতে পারে না। গণতন্ত্রকে অব্যাহত রাখাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। মাঝে মাঝে কিছু ঘটনা ঘটছে। ঘটনা ঘটলেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি না এটা কেউ বলতে পারবে না।”
এ সময় প্রধানমন্ত্রী মিডিয়ার সমালোচনা করে বলেন, “আমাদের মিডিয়ার তো অভাব নেই। আমরা ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথম ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অনুমতি দেই। অনেক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। আবার সেখানে বসে এমন সব লোক কথা বলেন, আমরা তো সবাইকে চিনি।”
প্রধানমন্ত্রী প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মুসার নাম উল্লেখ না করে তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “যেমন একজন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন, দিতে পারিনি বলে আমাদের চোর-দুর্নীতিবাজ বলছেন। আমি তো উনাকে চিনি, কিন্তু উনি বয়স্ক মানুষ। উনাকে তো জিজ্ঞাসা করতে পারি না মিডিয়ার অনুমতি দিলে উনি টাকা পেতেন কোথায়।”
তিনি বলেন, “কিছু কিছু সাবেক আমলা আছেন যারা ডিজিএফআইয়ের কাছে ধর্না দিয়েছেন উপদেষ্টা হওয়ার জন্য। এখন তাদের মুখে তাত্ত্বিক কথা শুনি। তারা যখন দায়িত্বে ছিলেন, তখন তারা দেশের জন্য কি দায়িত্ব পালন করেছেন।”
প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে বলেন, “রেন্টাল, কুইক রেন্টাল পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা না করলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব হতো না। যারা এটার সমালোচনা করে, তারা উন্নতি চায়নি। আমরা সরকারে এসে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি করতে পেরেছি। এবার ঈদের সময় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো ছিলো।”