জাতীয় পার্টির দুই তারকা চিহ্নিত ১০৬ প্রার্থীকে সোমবার ঢাকায় ডাকা হয়েছে। রাজধানীর গুলশানস্থ ইমানুয়েল সেন্টারে আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য এই ১০৬ প্রার্থীর সঙ্গে রুদ্ধদার বৈঠক করবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
বৈঠকের আলোচ্য বিষয় গোপন রাখতে মিডিয়ার প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি। ৯ সেপ্টেম্বরের প্রথম বৈঠকের মতোই এবারের বিশেষ কার্ড পদ্ধতি থাকছে। শুধু কার্ডধারীরাই রুমের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে।
দুই তারকা চিহ্নিত এই ১০৬ প্রার্থীর মানদণ্ড হচ্ছে, এসব প্রার্থী আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। এ সব প্রার্থীকেও এখনই মাঠে গিয়ে কাজ শুরু করার নির্দেশনা দেওয়া হবে।
যশোর-৫ আসনের সম্ভাব্য প্রাথী স্বরূপ চৌধুরী বাংলানিউজকে আাগামী সোমবার বৈঠকের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পার্টির দপ্তর সম্পাদক এবিএম তাজুল ইসলাম চৌধুরী এরশাদের বরাত দিয়ে তাকে সোমবার ঢাকা ডেকেছেন।
কেন ডাকা হয়েছে সে প্রশ্নের জবাবে স্বরূপ চৌধুরী বলেন, “শুনেছি আগামী নির্বাচনের জন্য এখনই মাঠে গিয়ে কাজ করার জন্য বলা হবে। এর বেশি জানি না।”
সোমবার ডাক পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে যারা তৃণমূল পর্যায়ে দলকে সংগঠিত করতে পারবেন, তাদেরকে আগামীতে মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে জাতীয় পার্টির সুত্র নিশ্চিত করেছে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্বাচনী আসনের বিপরীতে একক প্রার্থীকে ডাকা হয়েছে। মাত্র কয়েকটি আসনের বিপরীতে সম্ভাব্য দু’জন প্রার্থীকেই ডাকা হয়েছে।
দু’জন ডাক পাওয়া আসনের যেসব প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা বেশি এবং পার্টির তৃণমূলের নেতারা যাকে চাইবেন তাকেই মনোনয়ন দেওয়া বিষয়ে ঘোষণা থাকবে বলে জানা গেছে।
জাতীয় পার্টি চাইছে ২শ’ আসনের প্রার্থীকে চুড়ান্তভাবে মাঠে নামিয়ে দিতে। যাতে তারা সম্ভাব্য অন্যান্য প্র্রার্থী থেকে নির্বাচনী প্রচারণার দৌড়ে এগিয়ে থাকতে পারেন।
এছাড়া এরশাদ মনে করছেন, বিএনপিকে অপ্রস্তুত করতে আগাম নির্বাচন দিতে পারে আওয়ামী লীগ সরকার। সে ক্ষেত্রেও যেন জাতীয় পার্টি সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে।
পার্টির প্রেসিডিয়ামের বৈঠকেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যে সব আসনে ভালো প্রার্থী রয়েছে তাদের গ্রিন সিগন্যাল দেওয়ার। যাতে তারা এখন থেকেই মাঠ গুছিয়ে নিতে পারেন।
জাতীয় পার্টি মনে করছে, আগামী নির্বাচনে কোন দলেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। একই সঙ্গে জাতীয় পার্টি ৭০ থেকে ৮০ টি আসেন নির্বাচিত হতে পারবে। আর সে রকম পরিস্থিতি হলে তাদের ছাড়া কোন দলেই সরকার গঠন করতে পারবে না।
আওয়ামী লীগ বিএনপির মধ্যে সমঝোতা হওয়া কঠিন। তাই জাতীয় পার্টিকেই সমর্থন দিয়ে ক্ষমতায় পাঠাতে চাইবে দুই দলই। এ সুযোগ জাতীয় পার্টি হাত ছাড়া করতে চায় না। তাই তাদের এই আগাম রণ প্রস্তুতি বলেও জানা গেছে।
এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ১০৫ আসনের প্রার্থীদের ডাকা হয়। ওই প্রার্থীদের সম্ভাব্য চুড়ান্ত প্রার্থী বলে ঘোষণ দেওয়া হয়েছে।
তাদের বলা হয়েছে, কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। যে কারণে একেবারেই ঘোষণা দেওয়া যাচ্ছে না।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক এবিএম তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “স্যারের (এরশাদ) নির্দেশে সারা দেশ থেকে ১০৬ জনকে ডাকা হয়েছে। এরমধ্যে বেশির ভাগ আসনেই একজন করে ডাকা হয়েছে।”
এসব আসনের জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা এবং প্রার্থীদের অবস্থান সম্পর্কে জানবেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এ জন্যই এই মতবিনিময় সভা ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, এর আগে ১০৫ জনকে ডাকা হয়েছিলো। পর্যায়ক্রমে ৩শ’ আসনের প্রার্থীদের ডাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত রয়েছে।
পার্টি চেয়ারম্যান তাদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন। এছাড়া আগামী নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণ করবেন বলেও জানান জাপা মহাসচিব।