মহীউদ্দিন খান আলমগীর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। আর স্বরাষ্ট্র থেকে সরিয়ে অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনকে দেওয়া হয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
শনিবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক আদেশে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়া নতুন সদস্যদের দফতর বণ্টন ও রদবদল করা হয়।
মুজিবুল হককে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর ওবায়দুল কাদেরকে রাখা হয়েছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। এর আগে ওবায়দুল কাদের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের পাশপাশি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন।
হাসানুল হক ইনুকে দেওয়া হয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এর আগে আবুল কালাম আজাদ তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। এখন থেকে আবুল কালাম আজাদ শুধু সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকলেন।
ড. আব্দুর রাজ্জাককে শুধু খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রাখা হয়েছে। এ এইচ মাহমুদ আলীকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন মোস্তাফা ফারুখ মোহাম্মদ।
রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর আগে তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রাখা হয়েছে। আগে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
আর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ওমর ফারুক চৌধুরীকে শিল্প এবং আব্দুল হাইকে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন দিলীপ বড়ুয়া। আর মন্ত্রী হিসেবে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নিয়েছেন পাঁচজন এবং প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দুই জন।
শপথ নেওয়া ৫ পূর্ণ মন্ত্রীর মধ্যে প্রথম ৩জন হচ্ছেন যথাক্রমে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাতীয় সংসদের হুইপ মুজিবুল হক। বাকি দুজন দু’টি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এ এইচ মোহাম্মদ আলী ও মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ।
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন রাজশাহীর সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী ও ঝিনাইদহের আবদুল হাই।
প্রসঙ্গত, মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে গত বুধবার রাতে আমন্ত্রণ জানানো হয় তোফায়েল আহমেদ, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু ও মুজিবুল হককে। প্রতিমন্ত্রী হওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয় ওমর ফারুক চৌধুরী ও আব্দুল হাইকে। সে অনুযায়ী বঙ্গভবনে শপথ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেয়া হয়।
কিন্তু বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এ আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন। মেনন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের আমন্ত্রণ ‘সম্মানজননক নয়’ বলেও মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে সর্বশেষ গত ২৮ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদের নুতন সদস্য হিসেবে সুরঞ্জিতের সঙ্গে শপথ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে পূর্ণ মন্ত্রী করা হয়।
এরপর গত বছরের ৪ ডিসেম্বর বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে ভেঙ্গে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়’ এবং ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়’ নামে দুটি মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়।
একই দিন যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ভেঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়।
গত বছরের ৫ ডিসেম্বর যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে সৈয়দ আবুল হোসেনকে তথ্য ও যোগাযোগ প্র্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। ওবায়দুল কাদেরকে দেয়া হয় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
ওইদিন বাণিজ্য থেকে সরিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয় ফারুক খানকে। অপরদিকে বাণিজ্য মন্ত্রী হন বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করা জিএম কাদের।
সর্বশেষ পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ান সৈয়দ আবুল হোসেন। গত ২৩ জুলাই তিনি পদত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত, মহাজোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তানজিম আহমদ সোহেল তাজও পদত্যাগ করেন। এপিএস’র গাড়িতে টাকা পাওয়ার কেলেঙ্কারীর দায় মাথায় নিয়ে রেলপথ মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ান।