বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে পাশকাটাতে চাইলেও পারছেন না। শেষপর্যন্ত ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের কাছেই আটকে পড়ছেন তিনি।
বিকেএসপির তিন ও চার নম্বর ক্রিকেট মাঠের পাশে সাজঘর এবং ডর্মেটরি করার উদ্যোগ নিয়েছিলো বিসিবি। এজন্য বিকেএসপির সঙ্গে বিসিবির চুক্তিও হয়েছিলো। ফাইলটি অনুমোদনের জন্য ক্রীড়া ক্রীড়ামন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর তা আটকে যায়। আটকে দিয়েছেন খোদ ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার। বিসিবিকে সাজঘর এবং ডর্মেটরি তৈরির সুযোগ না দেওয়ার জন্য বিকেএসপি মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এমাদুল হককে মৌখিক ভাবে নিষেধ করে দিয়েছেন তিনি।
ক্রীড়ামন্ত্রণালয় থেকে বিকেএসপি কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়েছে, পঞ্চ পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নে অবকাঠামো তৈরির জন্য জমির প্রয়োজন হবে। বিসিবিকে মাঠ তৈরি এবং অবকাঠামো নির্মাণের সুযোগ দিলে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। যদিও ক্রীড়ামন্ত্রী বিকেএসপি এবং বিসিবির চুক্তির ফাইলে হাত লাগাননি। সেটাকে গাদা গাদা ফাইলের ভেতরে ফেলে রেখেছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বিসিবি সভাপতি মন্ত্রীকে অনুরোধ করলে শেষপর্যন্ত হয়তো ফাইলটি ছাড়া পেতে পারে।
বিকেএসপির বিষয়টি ঝুলে থাকলেও ফতুল্লাহ আউটার স্টেডিয়ামের দক্ষিণ আপাশে সাজঘর এবং ডর্মেটরি নির্মাণের যে উদ্যোগ নিয়েছিলো বিসিবি সে পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুমোদন ছাড়া সেখানে কোন অবকাঠামো তৈরি করতে পারবে না বিসিবি। অথচ বিসিবি ক্রীড়া পরিষদকে না জানিয়ে আউটার স্টেডিয়ামের পাশে সাজঘর এবং ডর্মেটরি তৈরির উদ্যোগ নেয়।
বিকেএসপি এবং ফতুল্লাহ আউটার স্টেডিয়ামের পাশে সাজঘর এবং ডর্মেটরি তৈরির জন্য ১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকার বাজেটও অনুমোদন করে বিসিবি। শিগগিরই দরপত্র আহ্বান করার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু ক্রীড়ামন্ত্রীর আপত্তির জন্য বিসিরিকে এখন তাদের পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হচ্ছে। তবে সাত কোটি টাকা খরচ করে যে তিনটা মাঠ উন্নয়ন করছে বিসিবি তা নিয়ে কোন আপত্তি করেননি মন্ত্রী।
বিসিবি সভাপতি মোস্তফা কামাল অবশ্য আশা ছাড়ছেন না। বিশেষ করে বিকেএসপিতে তারা সাজঘর এবং ডর্মেটরি তৈরির বিষয়ে চেষ্টা চালাবেন বলে জানিয়েছেন। তা করতে হলে ক্রীড়ামন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সম্ভব হবে নয়। কারণ বিকেএসপি পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পদাধিকার বলে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।
এদিকে বিসিবি সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয় অনুমোদন না দিলে তাদের কিছু করার থাকবে না। এমনকি বিকেএসপির তিন ও চার নম্বর মাঠ নিয়েও জটিলতা বাঁধতে পারে।
এসবের মূলে বিসিবি সভাপতি দায়ী বলে মনে করেন বোর্ড কর্মকর্তাদের কেউ কেউ। তারা প্রকাশ্যে সভাপতির সমালোচনা না করলেও আড়ালে বললেন,‘ক্রীড়া মন্ত্রীকে উপেক্ষা করার জন্য এসব হয়েছে।’
পদাধিকার বলে আর ১০টা ফেডারেশনের সভাপতির মতো বিসিবি সভাপতিও ক্রীড়ামন্ত্রীর অধীনে। কিন্তু মোস্তফা কামাল এনএসসিকে আমলে দিতে রাজি নন।