যোগাযোগ ও রেলমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্ল্যান বা মাস্টার প্ল্যান দিয়ে জনগনের মন জয় করা যায় না। মন জয় করতে হলে কাজ করতে হবে।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে ডিপার্টমেন্ট আয়োজিত ‘২০ বছর মেয়াদী রোড মাস্টার প্ল্যান’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, মাস্টার প্লানের নামে বিগত দিনে অনেক কিছু হয়েছে কিন্তু কাজের বেলায় ঠনঠন। চটকধারী নাম দিয়ে অনেক কিছুই হয়েছে। কেতাবে আছে- কিন্তু গোয়ালে নেই। এমন চিত্র আমি দেখতে চাই না।
মন্ত্রী বলেন, অতীতে প্ল্যান আর মাস্টার প্ল্যান করে কেউ জনগণের মন জয় করতে পারেনি। আমারাও পারবো বলে মনে হয় না। তাই আমি কোনো প্ল্যানে বিশ্বাসী নই- কাজে বিশ্বাসী। তবে কাজ করতে গিয়ে প্ল্যান লাগবে সেই প্ল্যান যেন কাজের সহায়ক হয় জনগণকে বোকা বানানোর জন্য না হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “অতীতে দেখেছি টেন্ডার হয়নি অথচ ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। কাজ শেষ হয়নি- অথচ উদ্বোধন করা হয়েছে। “
আমি যতদিন এই মন্ত্রণালয়ে আছি- ততদিন নির্মাণ কাজ শুরু করার আগে কোনো ভিত্তি প্রস্তর করা চলবে না। পূর্ণাঙ্গ কাজ না হলে এর উদ্বোধন করা হবে না। অন্যরা করলেও আমি করতে দেব না।
তিনি বলেন, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ৫০ শতাংশ অপকর্ম কমানো সম্ভব হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশ গাফিলতি ও অপকর্ম এখনও রয়ে গেছে। নিজের মন্ত্রণালয়ে উদাহরণ টেনে বলেন, আমি আসার পর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) ৫০ ভাগ অনিয়ম কমাতে পেরেছি। বাকী ৫০ ভাগ অপকর্ম এখনও রয়ে গেছে।
২০ বছরের রোড মাস্টার প্ল্যানের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “২০ বছরের স্বপ্ন দেখিয়ে লাভ নেই। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আমার মেয়াদের (আট মাসে) ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্নগুলোকে মেরামত করতে চাই। মানুষ খুব বেশি কিছু চায় না। অল্প থেকেও যদি তার বঞ্চিত হয়- তখন তারা কষ্ট পায়।
মন্ত্রী আরো বলেন, কাজ না করে যারা ফাঁকিবাজি করে তাদের চোখ থাকে কমিশনের দিকে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হবে। রাস্তার জন্য কোনো মানববন্ধন বা ধর্মঘট দেখতে চাই না বলে জানান তিনি।
অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আগামী এপ্রিলের মধ্যে সড়ক ও সেতু মেরামত কাজ শেষ হবে জানিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, জনগণ আমাদের প্রশংসা করছে আন্তরিকার জন্য। আর কোনো নতুন রাস্তা বা সেতু নির্মাণ না করে খানাখন্দে ভরা যা আছে- তা মেরামত করা হবে। এক্ষত্রে পিছিয়ে পড়া জনপদ অগ্রাধিকার পাবে।”
কী করলাম আর কী করলাম না তা ঢাকঢোল পিটিয়ে কোনো লাভ নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, জনগণ যা চায় কাজের মাধ্যমে তার বাস্তবায়ন করতে হবে।
আট মাসে যা করেছি সেটাতে জনগণ এখনও স্বস্তিতে নেই। জনগণের স্বস্তি না আসা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।
বিগত আমলে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের হালহকিকত প্রসঙ্গে কাদের বলেন, বকেয়া পরিশোধ না করায় এখন আমি অফিসে বসতে পারছি না। যে পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে তা করা হলে বরাদ্দের আর কিছুই বাকি থাকবে না।
তিনি বলেন, অনেক বড় বিরতির পরে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এখন টিম ওয়ার্ক গড়ে সম্ভব হয়েছে। এর ফলে সচিবসহ প্রকৌশলীরা ঈদের সময়ও মাঠে থেকে কাজ করেছেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী দিলিপ কুমার বড়ুয়া।
সড়ক ও হাইওয়ে বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান লস্করের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সড়ক বিভাগের সচিব এমএএন সিদ্দিকসহ সেতু ও রেল বিভাগের সচিব।