আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ১৩ ইরানি নাবিককে উদ্ধার করেছে মার্কিন নৌবাহিনীর সদস্যরা।
এই নাবিকরা তাদের মাছ ধরার জাহাজসহ জলদস্যুদের হাতে প্রায় ৪০ দিন যাবৎ জিম্মি ছিল বলে জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত শুক্রবার মার্কিন নৌবাহিনী জানায়, আরব সাগরে টহলরত তাদের ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস কিড জিম্মি ইরানি জাহাজ আল মোলাই বিপদসঙ্কেত পায়।
মার্কিন নৌবাহিনীর অপরাধ বিষয়ক কর্মকর্তা জোশ শোমিনকি জানান, জিম্মি নাবিকদের খাবার ফুরিয়ে এসেছিল। জলদস্যুরা জিম্মি নাবিকদের জোর পূর্বক জলদস্যুতায় নিয়োজিত করারও চেষ্টা করছিল বলে মনে হয়।
বিপদ সঙ্কেত পেয়েই মার্কিন নৌবাহিনীর সদস্যরা হেলিকপ্টার নিয়ে জিম্মি জাহাজটির ওপর গত বৃহস্পতিবার অবতরণ করে এবং সেখান থেকে ১৫ জন জলদস্যুকে আটক করে। তবে জলদস্যুরা কোনও বাধা দেওয়ার চেষ্টা না করে দ্রুত আত্মসর্মপণ করে বলে জানায় মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
জলদস্যূরা জিম্মি জাহাজটিকে সাগরের এই অঞ্চলে তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের একটি কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পরে নৌবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার করা নাবিকদের খাবার, পানি এবং চিকিৎসা দিয়েছে। তবে উদ্ধার নাবিকরা এবং জাহাজটি এখন কোথায় রয়েছে সে ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
তবে আটক জলদস্যুদের আরব সাগরে মোতায়েন মার্কিন নৌবাহিনীর অপর একটি পরমাণু শক্তিচালিত বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ইএসএস জন সি স্টেনিসে আটক রাখা হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড ইরানি নাবিক উদ্ধারের ঘটনাকে অবিশ্বাস্য এবং একটি বড় ঘটনা বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন ‘হরমুজ প্রণালীতে মার্কিন নৌবাহিনীর অবস্থানের বিরোধিতা করছে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান। আবার সেই নৌবাহিনীর জাহাজই ইরানের নাবিকদের জলদস্যুদের কবল থেকে উদ্ধার করল।’
তবে ইরানের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি।
আরব সাগরে এই উদ্ধারনাটক এমন এক সময়ে মঞ্চায়িত হলো যখন তেহরান পারস্য উপসাগরের প্রবশেপথ হরমুজ প্রণালীতে মার্কিন জাহাজকে স্বাগত জানানো হবে না বলে উপর্যুপুরি হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
ইরানের ওপর পশ্চিমাদের নতুন করে অবরোধ আরোপের প্রেক্ষিতেই ইরান এই হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্ব বাজারে মধ্যপ্রাচ্যের তেল রপ্তানিতে হরমুজ প্রণালী কৌশলগত কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জলপথ। এখন দেখার বিষয়, আরব সাগরে সংঘটিত সম্প্রীতির আবহ পারস্য উপসাগরে বিবদমান এই দুই পক্ষের জন্য শান্তির সুবাতাস বয়ে আনে কি না।