‘ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সাক্ষাতকারের আহবান প্রত্যাখ্যান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ওবামা,’ সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এ গুজবকে উড়িয়ে দিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে চলতি মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে সাক্ষাত প্রার্থনা করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ গ্রহণের জন্য চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরের কথা তার। এ সময়ই ওবামার সঙ্গে তার সাক্ষাতের জন্য হোয়াইট হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর অফিস। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারণার ব্যস্ত সিডিউলের অজুহাত দেখিয়ে তা এড়িয়ে যায় হোয়াইট হাউজ।
এর পরপরই মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে, ইরানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতার ব্যাপারে ওয়াশিংটনকে উদ্দেশ্য করে নেতানিয়াহুর দেওয়া বক্তব্যে ক্ষুদ্ধ হয়েই ওবামা তার সঙ্গে বৈঠক না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের পর থেকে প্রত্যেকবারের যুক্তরাষ্ট্র সফরে ওবামার সঙ্গে সাক্ষৎ করে আসছেন নেতানিয়াহু।
এর পরপরই হোয়াইট হাউজ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এ প্রতিবেদন অস্বীকার করে জানান, নেতানিয়াহুর সঙ্গে ওবামার নিয়মিত যোগাযোগ আছে। এবং আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র সফরে ইসরায়েলি নেতার সঙ্গে হিলারি ক্লিনটন বৈঠক করবেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ভাষণ দেবেন ওবামা এবং নেতানিয়াহু বক্তব্য রাখবেন ২৮ সেপ্টেম্বর।
এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র টমি ভিয়োতোর বলেন,“ ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ওবামার সঙ্গে সাক্ষাত চেয়ে কোনো অনুরোধ করা হয়নি এবং ফলে অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের কোনো ঘটনা ঘটাই সম্ভব নয়।” সাধারণ পরিষদ চলার সময় ওবামা কোনো দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মঙ্গলবার রাতে দেওয়া বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ জানায়, মঙ্গলবার রাতেও নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে ঘণ্টাব্যাপী কথা বলেন ওবামা। সেখানে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি প্রসঙ্গেও তাদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়।
মূলত ইরানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দেওয়া নেতানেয়াহুর বক্তব্য প্রকাশের পরপরই এ বির্তকের সৃষ্টি হয়। বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে সংবাদসম্মেলনে দেওয়া নিজের বক্তব্যে নেতানিয়াহু মূলত যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “ বিশ্ব সম্প্রদায় ইরানকে ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। যে দেশগুলো ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে কোনো লাল রেখা টেনে দিতে পারে না, তারা ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামনেও লাল রেখা টানার অধিকার রাখেনা।”
ইসরায়েলের হারেৎজ পত্রিকা অবশ্য নেতানিয়াহুর এ মন্তব্যকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর ‘অভূতপূর্ব’ মৌখিক আক্রমণ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।