বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৪র্থ কারামুক্ত দিবসের সমাবেশে বঙ্গবন্ধুকে কটুক্তি করার মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ফরিদপুর বিএনপির নেতাকর্মীরা।
৪ সেপ্টেম্বর ওই সমাবেশে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে কটুক্তি করে বক্তব্য দেন।
ওইদিন রাতেই জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কে এম সেলিম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয়- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা, জেলা যুবদল সভাপতি আফজাল হোসেন খান পলাশ, সাধারণ সম্পাদক এ কে কিবরিয়া স্বপন, সহসভাপতি এবি সিদ্দিকী মিতুল, শহর যুবদল সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজোয়ানসহ অজ্ঞাত ৭/৮ নেতাকর্মীকে।
মামলা দায়েরের পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হানা দিচ্ছে পুলিশ। ইতোমধ্যে জেলা বিএনপি ও যুবদলসহ অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষনেতারা গা ঢাকা দিয়েছেন। রাতে বাড়িতে থাকছেন না দ্বিতীয় সারির নেতারাও। বিএনপির সব নেতাদের মধ্যে এখন শুধু গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে, যুবদল ও বিএনপির ৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় শুক্রবার পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এজাহারভুক্ত কাউকে গ্রেফতার করা পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সভাপতি আফজাল হোসেন খান পলাশ বলেন, “ফরিদপুরে আমাদের উপর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে মামলা মোকদ্দমা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ আমাদের মাঠে দাঁড়াতে দিচ্ছে না। অহেতুক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে।”
তিনি আরও বলেন, “সেদিনের সমাবেশে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোনো কটুক্তি করা হয়নি। ইছা ভাই শুধু ইতিহাস পর্যালোচনা করে উপমা দিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন, সেটাকে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করে কটুক্তি বলা হচ্ছে”।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ বলেন, “আমি বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে পুরো বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শতশত নেতাকর্মীকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানি করছে পুলিশ। ক্ষমতাসীন দলের এই পুলিশি আচরণ দমনপীড়ন ফরিদপুরে মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।”
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম জানান, নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানির অভিযোগ সত্য নয়।
ইতোপূর্বে গ্রেফতার হওয়া ৯ নেতাকর্মীর এজাহারভুক্ত আসামী নন স্বীকার করে তিনি বলেন, “আমরা আসামি ধরার জন্য অভিযান চালাচ্ছি, হয়রানির জন্য নয়।”
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি বেনজির আহমেদ তাবরীজ জানান, মঙ্গলবার বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে শহরের বনলতা সিনেমা হলের সামনে শহর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী মাহবুবুরে সভাপতিত্বে একটি সভা শেষে মিছিল নিয়ে বের হলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ সময় পুলিশ শহর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার হোসেন সিথিল ও ছাত্রদল নেতা হাসান, রিপনকে আটক করেছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহসিনুল হক জানান, মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুর শহর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।