আমাদের দেশের অনেক মেধাবী তরুণ মিউজিশিয়ান আছে যাদের প্রতিভা থাকলেও ভালো কোথাও সুযোগ না পাওয়ায় সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এ রকম মেধাবী তরুণ মিউজিশিয়নদের আলোকিত প্লাটফর্মে দাঁড় করানোর জন্য এগিয়ে এসেছে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড নেসক্যাফে।
দেশের মেধাবী মিউজিশিয়ানের খোঁজে গত বছরের শেষদিকে নেসক্যাফে আয়োজন করেছিল সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী মিউজিক্যাল প্রতিযোগিতা ‘নেসক্যাফে গেট সেট রক’। এ বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশের অনেক তরুণ মিউজিশিয়নদের মধ্য থেকে কয়েক দফা বাছাইয়ের পর ১২জনের দুটি গ্রুপ থেকে একটি গ্রুপের ৬জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তরুণ মিউজিক প্রতিভা খোঁজার এ কার্যক্রমে বিচারক হিসেবে ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু, পিলু খান ও বাপ্পা মজুমদার।
বিচারক ও দর্শকদের ভোটে ৮১ দশমিক ১৮ পেয়ে গ্রুপ বি দল চ্যাম্পিয়ন নিবার্চিত হয় । এই গ্রুপের মিউজিশিয়না হলেন- লিড গিটারিস্ট রেজওয়ান, বেইজ গিটারে রোমান্স, কি-বোর্ডে সোহাগ , ট্রাডিশনাল অ্যান্ড আনকনভেশনালে পাবলো, ড্রামসে শিশির ও ভোকালে দ্বীপ।
এরই মধ্যে নেসক্যাফে পৃষ্ঠপোষকতায় এই ব্যান্ডের নাম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সিক্স’ । আসছে কোরবানীর ঈদে প্রকাশিত হবে এই ব্যান্ডের প্রথম অ্যালবাম। বর্তমানে ব্যান্ডটির তরুণ মিউজিশিয়নরা অ্যালবামের কাজ নিয়ে কাটাচ্ছেন ব্যস্ত সময় । সম্প্রতি বাংলানিউজে এসেছিল এ ব্যান্ডের সদস্যরা।
‘সিক্স’ ব্যান্ডের তরুণ মেধাবী মিউজিশিয়ানরা কথা বললেন তাদের নতুন অ্যালবামের কাজ নিয়্।ে প্রথমেই এ ব্যান্ডের ভোকাল দীপ বললেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হবার পর থেকে এ অ্যালবামের কাজ শুরু করেছি। আপাতত ৬ টি গানের কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি আগামী কোরবানীর ঈদে আমরা শ্রোতাদের হাতে এ অ্যালবামটি তুলে দিতে পারব।’
ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট রেজওয়ান। অ্যালবামের গান ও সুর করা প্রসঙ্গে বললেন, ‘ এখানে এককভাবে কেউ কিছু করে নি। আমরা সবাই সব গানগুলো নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করেছি। কেউ গান লিখছে আবার আমাদের মাঝেই কেউ সুর করছে। সবার আইডিয়া নিয়ে আমরা নতুন ধরনের একটা ব্লিন্ডিং মিউজিক করার চেষ্টা করেছি।’
কথা প্রসঙ্গে বেইজ গিটারিস্ট রোমান্স বললেন, ‘আমরা একা কেউ কিছু করতে চাই না। যেহেতু একটি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর আমাদের একটি ব্যান্ডটি গঠন করা হয়েছে, তাই সবাই মিলে ভালো কিছু গান করার চেষ্টা করছি।’
নতুন অ্যালবামের গানগুলোর রেকর্ডিংয়ের কী অবস্থা ? উত্তরে দলের কি-বোর্ডিস্ট সোহাগ বললেন, ‘আমরা এ মাসেই গাজীপুরে ৪ দিনের জন্য একটা রির্সোট ভাড়া করেছি। ঐখানেই গানগুলোর ফাইনাল মিক্সিং ও রেকডিং এর কাজটা শেষ করতে চাই।’
কিন্তু রেকর্ডিং এর জন্য এত দূরে কেন? জবাবে পাবলো বললেন. ‘আমরা গাজীপুরে অন্যরকম একটা ছিমছাম সুন্দর জায়গা দেখে এসেছি। যেখানে এক ধরনের শান্ত প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখেছি। যা আমাদের সবার পছন্দ হয়েছে। আমরা সেখানকার মনোরম পরিবেশে রেকর্ডিং স্টুডিও বানিয়ে অ্যালবামের বাকি কাজটা শেষ করতে চাই।’
ব্যান্ডের অপর সদস্য ড্রামার শিশির অনেকক্ষণ ধরে চুপচাপ বসে থাকায় তাকে প্রশ্ন করা হলো, নতুন অ্যালবাম নিয়ে আপনার কি কিছু বলার নেই? উত্তরে হাসি দিয়ে শিশির বললেন, ‘বেশি কিছু বলতে চাই না। শুধু এটুকু বলব এ অ্যালবামটিতে শ্রোতারা ভিন্ন এক মিউজিক উপভোগ করতে পারবেন, যা এর আগে কেউ শোনে নি।’
এ অ্যালবামে গান থাকছে মোট ৯টি। এর মধ্যে ৬ টি গান থাকবে চ্যাম্পিয়ন গ্রুপ ‘সিক্স’ এর এবং বাকি ৩টি গান থাকছে রানার আপ টিমের। নেসক্যাফের রানার আপ টিমের অন্য সদস্যরা হলেন- লিড গিটারে রাজিব, বেইজ গিটারে মিথুন, কি-বোর্ডে ইমতিয়াজ. ট্রাডিশনাল অ্যান্ড আনকনভেশনালে শ্যামল, ড্রামসে সুসি ও ভোকালে হাসিব।
নেসক্যাপের আয়োজনে ‘গেট সেট রক’ চ্যাম্পিয়ন গ্রুপ নিয়ে গঠন করা ব্যান্ড ‘সিক্স’ অ্যালবাম প্রকাশের সুযোগ ছাড়াও এক বছরের জন্য একটি ফ্রি প্র্যাকটিস প্যাড , ছয় লাখ টাকার চেক এবং এক বছরের জন্য নেসক্যাফের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
‘বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড এসোসিয়েশন’-এর প্রেসিডেন্ট হামিন আহমেদ তাদেরকে নেসক্যাফে ব্যান্ড অব দি ফিউচার ‘সিক্স‘-কে বাম্বার সর্বকনিষ্ঠ মেম্বারশিপ প্রদান করেছেন।
ধাঁপের পর ধাঁপ ডিঙিয়ে আসা তরুণ মিউজিশিয়নদের ব্যান্ড সিক্স-এর কাছে সঙ্গীতপ্রিয় সবার প্রত্যাশা ভালো কিছু গান। এ জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে আগামী ঈদ পর্যন্ত।