দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের কোনো ধরনের শিথিলতা বরদাশত করা হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি রোববার সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ২৯তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এই সতর্কবার্তা দেন।
নতুন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, বিভাগীয় শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।”
আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মানবিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব দিয়ে জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
কুচকাওয়াজে ৭৩ জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে এএসপি লিমন রায় কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দেন। শাকিল আহমেদ হর্সম্যানশিপে সেরা এবং শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সেরা ম্যান কাপ গ্রহণ করেন।
অপরাধ দমনে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী অপরাধের ধরন দ্রুত পাল্টাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমন, সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিংসহ নতুন নতুন অপরাধ দমনে পুলিশ বাহিনীকে নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটাতে হবে। এ জন্য প্রশিক্ষণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
পুলিশ বাহিনীর আধুনিকায়নে বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এসআই ও সার্জেন্ট পদকে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণী এবং ইন্সপেক্টর পদকে দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদে উন্নীত করা হয়েছে।
“বর্তমান সরকার ক্যাডার ও ননক্যাডার মিলিয়ে পুলিশ বাহিনীর ৩২ হাজার পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০৬টি ক্যাডার পদসহ ২৩ হাজার ৮৭৯টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এর ফলে পুলিশের সেবাদানের সামর্থ্য বহুগুণ বেড়েছে এবং পদোন্নতিরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ভিভিআইপি, ভিআইপি ও অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে দুটি সিকিউরিটি ও প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন ও রংপুর রেঞ্জ গঠন এবং নতুন ১৮টি থানা এবং ২৭টি তদন্তকেন্দ্র স্থাপনের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৫ মার্চের কালরাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের পুলিশ সদস্যরা হানাদারদের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। তিনি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী একাডেমি চত্বরে একটি গাছের চারা রোপণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী পৌঁছলে তা অভ্যর্থনা জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার ও একাডেমির অধ্যক্ষ নাঈম আহমেদ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, রাজশাহীর মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, স্বরাষ্ট্র সচিব সি কিউ কে মোশতাক আহমেদ অনুষ্ঠানে ছিলেন।