প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে তদবির শুরু করেছেন দেশের সবচেয়ে বড় ঋণ কেলেংকারীর হোতা হলমার্কের কর্ণধার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদ। ইতোমধ্যে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রধানমন্ত্রীর দু’টি নাম্বারেও ফোন দিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।
কথা বলার সুযোগ পাননি বলে তানভীরের ঘনিষ্টজনরা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নম্বরে ফোন দিয়েই শুধু ক্ষান্ত হননি তানভীর। দেখা করার জন্য সরকারের মন্ত্রী এমপিদেরও সুপারিশের জন্য ঘুরছেন।
তানভীরের ঘনিষ্ট সূত্র জানায়, গত তিন দিন সরকারের উপদেষ্টা, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং একাধিক এমপির কাছে ফোন দিয়েছেন হলমার্কের এমডি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ
করিয়ে দেয়ার বিষয়ে কেউ তাকে ‘গ্রিন সিগনাল’ দেয়নি। একজন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক থাকলেও তিনিও তানভীরকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন-‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিতর্কিত এ ইস্যু নিয়ে কথা বলা যাবে না।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার কোনো সুযোগ না পেয়ে হলমার্ক গ্রুপের পক্ষ থেকে একটি চিঠি লিখছেন তানভীর।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ চিঠিতে তিনি নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করে হলমার্ক গ্রুপের সঙ্গে কত হাজার মানুষের জীবিকা জড়িত এ বিষয় উঠে আসবে। ঋণের টাকা দিতে যেনো পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয় এসব বিষয় চিঠিতে লেখা থাকবে। বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন আকারে আগামী সাপ্তাহে এ চিঠির দিতে পারেন তানভীর মাহমুদ।
সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা (সাবেক শেরাটন) হোটেল শাখা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে নেওয়া ২৬শ’ কোটি টাকার অর্ধেক ১৫ দিনের মধ্যে ঋণের অর্ধেক টাকা ফেরত চেয়ে আলোচিত হলমার্ক গ্রুপকে ৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার চিঠি দিয়েছে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ঋণের অর্ধেক হিসেবে ১ হাজার ৩৩৪ কোটি ২০ লাখ টাকা হলমার্ককে পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে।
সোনালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে হাতে হাতেই চিঠিটি পৌছানো হয়। সেদিনই চিঠিটা হাতে পেয়েছেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন হলমার্কের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) তুষার আহমেদ।
সোনালী ব্যাংকের টাকা চিঠি পাওয়ার পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর দিনভর হলমার্ক গ্রুপের কর্ণধারেরা বৈঠক করেছেন। সোনালী ব্যাংকের চিঠির জবাব এখনও পর্যন্ত দেয়নি হলমার্ক গ্রুপ।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, হলমার্ক গ্রুপ ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে পারছে না। তারা সময়ক্ষেপণের জন্য সোনালী ব্যাংকের কাছে আরও সময় চেয়ে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আগামী রোববার বা সোমবার হলমার্ক সোনালী ব্যাংকের কাছে টাকা ফেরতের জন্য সময় চেয়ে চিঠি দেবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) শেষে সোনালী ব্যাংকের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার দত্ত সাংবাদিকদের বলেছেন, হলমার্ক গ্রুপ সোনালী ব্যাংকের একটি শাখা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে যে টাকা নিয়েছে তার পুরোটাই ফেরত দিতে হবে।
ব্যাংক আইনে তাদের সাজা হবে বলেও তিনি জানান।