‘আমরা বিশ্বাস করি, তাদের হারাতে জানপ্রাণ উজাড় করে দিতে পারবো। আমাদের ভালো সুযোগ আছে’ – কথাগুলো ম্যাচের আগে বলেছিলেন ব্রেন্টফোর্ড কোচ থমাস ফ্র্যাঙ্ক। তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে যেভাবে আতিথেয়তা দিল তার দল, সেটা হয়তো কল্পনাও করেননি তিনি। রোনালদোদের নিয়ে রীতিমতো ‘ছেলে খেলা’য় মাতলো ব্রেন্টফোর্ড। ইউনাইটেড তো তার দল হারিয়েছেই, তাদের জালে গুণে গুণে ৪ গোল জড়িয়েছে ‘মৌমাছিরা’।
গেল মাসের শুরুতে ইউনাইটেড ছাড়ার ইচ্ছা জানিয়ে দিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। পর্তুগিজ তারকা কেন দল ছাড়তে চান, তার একটা প্রমাণই যেন গতকাল দেখাল ইউনাইটেড। গেল মৌসুমে অবনমন অঞ্চলের কাছাকাছি থেকে শেষ করা ‘পুঁচকে’ ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে শুরুর অর্ধে যেমন ছন্নছাড়া ফুটবল খেলেছে দল, এমন ক্লাবে কেনই বা খেলবেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর বিজেতা?
লন্ডনের জিটেক কমিউনিটি স্টেডিয়ামে ইউনাইটেডের দুঃস্বপ্নের শুরুটা হয় ম্যাচের ১০ মিনিটে। জশ দাসিলভার গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। এতে অবশ্য দোষ আছে রোনালদোর নিজেরও, তবে তার চেয়ে বেশি দোষ গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়ার। থ্রো ইন থেকে বল হারিয়েছিলেন মাতিয়াস ইয়ানসেনের কাছে, এরপর তিনি তা স্কয়ার করেন মাঝে থাকা দাসিলভাকে। তার শট ডি গিয়ার হাতের ফাঁক গলে জড়ায় জালে।
আট মিনিট পর ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন বল হারান সেই ইয়ানসেনের কাছে৷ তা থেকে আসে আরও এক গোল। ম্যাচের আধঘণ্টা পেরোতে ব্যবধান আরও বাড়ায় ইউনাইটেড, কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে মাথা ছোঁয়াতে বিশাল জায়গা পেয়েছিলেন ইভান টনি। ইউনাইটেডের অস্তিত্বহীন রক্ষণের কেউই তাকে পাহারায় রাখেননি, তারই সুযোগটা নেন টনি। তার মাথা ছুঁয়ে গোলমুখে যাওয়া বলটা বেন মির হেডারে জড়ায় জালে। ৩০ মিনিটে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
এর পরের পাঁচ মিনিট ইউনাইটেড ফেরার চেষ্টা করেছে বলের দখল ধরে রেখে। তবে ৩৫ মিনিটে প্রতি আক্রমণে ইউনাইটেডের সে চেষ্টা ধূলিস্যাৎ করে দেয় ব্রেন্টফোর্ড। বলের দখল নিয়েই আক্রমণে আসেন ইভান টনি, তার পাস থেকে ব্রায়ান এমবুয়েমো বল জালে জড়িয়ে গোলের ‘হালি’ পূরণ করেন। ইউনাইটেডের ম্যাচ অবশ্য ‘শেষ’ এর আগেই। প্রথমার্ধে আর গোল খাননি রোনালদোরা।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর পর থেকেই মনে হয়েছে, ইউনাইটেড অপেক্ষা করছে কেবল শেষ বাঁশির। সে অপেক্ষা শেষ হয়েছে এক সময়, তবে চার গোলের লজ্জাটা একটুও কমেনি দলটির।