জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ ফেরত দিতে হলমার্ক গ্রুপকে আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠি দেবে রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব্যাংক। চিঠিতে, হাতিয়ে নেওয়া অর্থের ৫০ শতাংশ (অর্ধেক) আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নগদ পরিশোধ করতে বলা হবে। বাকি টাকা জামানত থেকে সমন্বয় করার কথা হবে। তবে সেটি হবে শর্তসাপেক্ষে।
সোনালী ব্যাংক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার এ ব্যাপারে চূড়ান্ত করতে সোনালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের জরুরি বৈঠক বসছে। সেখানে চিঠির খসড়া চুড়ান্ত করে তা মঙ্গলবারই পাঠানো হবে হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদকে।
জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কাশেম হুমায়ূন সোমবার বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, তানভীর মাহমুদ দুর্নীতি দমন কমিশনে বলেছেন, সোনালী ব্যাংক থেকে অবৈধভাবে উত্তোলিত অর্থের বিশগুণ সম্পদ অথবা অর্থ তার রয়েছে। তিনি এও বলেছেন, পাই টু পাই অর্থ তিনি পরিশোধ করে দেবেন। তার বক্তব্যকে আমরা গুরুত্ব সহকারে নিয়ে অর্থ আদায়ে উদ্যোগ নিয়েছি। এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার তাকে চিঠি দেওয়া হবে।’’
সূত্র মতে, জালিয়াতির মাধ্যমে হলমার্কসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এর মধ্যে তানভীর মাহমুদের মালিকানাধীন হলমার্ক গ্রুপ একাই নিয়েছে ২ হাজার ৬৬৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর অর্ধেক প্রায় ১ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা চিঠির দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে পরিশোধ করার কথা বলবে সোনালী ব্যাংক।
আর বাকি টাকা জামানত থেকে সমন্বয় করা হবে। তবে সেটি ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্ক, সোনালী ব্যাংকের বিধি বিধান পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে।
এসব বিবেচনা করেই বলা হবে, তিনি ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন কিনা।
সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে হলমার্ক গ্রুপ সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে দায় স্বীকার পত্র দিয়েছে। আর তাদের সম্পদ বন্ধক হিসেবে নেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ সোমবার পর্যন্ত তথ্য মতে, হলমার্ক গ্রুপ তাদের সম্পদ মটর্গেজ দেওয়া শুরু করেছে।
একটি সূত্র বলছে, চাপের মুখে হেমায়েতপুরের ৪৬ একর জমি হলমার্ক বন্ধক বা জামানত দিতে রাজি হয়েছে। এর প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া আরো ১৩ একরের দলিল তারা সোনালী ব্যাংককে দেবে। যাচাই-বাছাই করে এসব সম্পদ জামানত হিসেবে নেওয়া হবে।
জানা গেছে, একইভাবে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ আদায়ে অন্য দায়ী অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেও চিঠি দেবে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, সোনালী ব্যাংক থেকে রোববার কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় অভিযুক্ত দুইজন উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং দুইজন মহাব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে চিঠি পাঠায়। তবে সোমবার বিকেল পর্যন্ত এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয় কোনো সিদ্ধান্ত সোনালী ব্যাংককে জানায়নি।
এ অভিযোগে সোনালী ব্যাংক ১৭ জন কর্মকর্তাকে ইতিমধ্যেই সাময়িক বরখাস্ত করেছে।