দক্ষিণমেরুতে মিথেন গ্যাসের বিশাল মজুদ

দক্ষিণমেরুতে মিথেন গ্যাসের বিশাল মজুদ

বরফ আচ্ছাদিত দক্ষিণমেরুতে বিপুল পরিমান মিথেন গ্যাসের মজুদ থাকার প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মিথেন একটি শক্তিশালী গ্রিনহাউজ গ্যাস। মজুদ এ মিথেন কখনো বায়ুমণ্ডলে অবমুক্ত হলে বৈশ্বিক উষ্ণায়নে তা বড় ভূমিকা রাখবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির গবেষণকরা তথ্য দিয়েছেন। তাদের গবেষণার ফলাফল বিজ্ঞান সাময়িকী ন্যাচারে প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রাচীনকালে নানা ধরনের জৈব বস্তু বরফের নিচে চাপা পড়ে অনুজীবের ক্রিয়ায় এসব মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়েছে।

গবেষক দলের প্রধান ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেমিমা ওডাম বলেন, “দক্ষিণমেরুতে বিপুল পরিমাণ জৈব কার্বন মজুদ রয়েছে। এর পরিমান উত্তরে স্থায়ীভাবে বরফাচ্ছিদ অঞ্চলে মজুদের ১০ গুণেরও বেশি।”

ল্যাবরেটরিতে পরিচালিত পরীক্ষায় তারা দেখেছেন, এই আংশিক বরফাচ্ছাদিত পরিবেশ জৈবিকভাবে যথেষ্ট সক্রিয়। এখানকার জৈব কার্বন অনুজীবের বিপাকের ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং মিথেম গ্যাসে রূপান্তিত হয়ে থাকতে পারে।

তারা বলছেন, এ অঞ্চলে বরফের চাদরের নিচে মিথেন ভাণ্ডারে শত শত কোটি টন কার্বন মজুদ থাকার সম্ভাবনা প্রবল।

আর সবচেয়ে উদ্বেগেরে বিষয় হলো, এখানকার মিথেন ভাণ্ডারের অগভীরতার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এ স্তর অস্থির হয়ে উঠতে পারে। যার অর্থ অবমুক্ত মিথেন গ্যাস গ্রিনহাউজ গ্যাসের কাজ করবে। এর ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ত্বরান্বিত হবে।

সহগবেষক ড. সান্ড্রা আর্নড বলেন, “এখানে বরফের চাদরের নিচে মিথেন হাউড্রেটের মজুদ থাকাও বিচিত্র নয়। সমুদ্রতলের পলিতে ঠাণ্ডা এবং উচ্চ চাপ থাকার কারণে সেখানে এ যৌগ তৈরি হয়। দক্ষিণ মেরুর পরিবেশেও এমনটি হওয়া খুবই সম্ভব।”

ন্যাচারে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, এ পর্যবেক্ষণ এটাই প্রকাশ করছে যে, দক্ষিণমেরুর বরফের চাদর সব সময় উপেক্ষার চোখে দেখা হলেও এটি বিশ্বে মিথেনের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। সেই সঙ্গে জলবায়ুর জন্য এটি হুমকি হওয়ার আশঙ্কাও প্রবল।

আন্তর্জাতিক