প্রণিধানযোগ্য ভূমিকা ড. সিদ্দিকুরের ড. তারেকের ভূমিকায় বিশ্বব্যাংকের ইতিবাচক মনোভাব

প্রণিধানযোগ্য ভূমিকা ড. সিদ্দিকুরের ড. তারেকের ভূমিকায় বিশ্বব্যাংকের ইতিবাচক মনোভাব

পদ্মাসেতুতে অর্থায়নে বিশ্বব্যাংক অবশেষে ইতিবাচক মনোভাব দেখাতে শুরু করেছে। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ তারেক।

অর্থমন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এতথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

ড. তারেক তার এই মিশনে বিশ্বব্যাংকে ভারতের নির্বাহী পরিচালক মুকেশ এন প্রসাদের পক্ষ থেকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা।

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনাও বুধবার তার এক বক্তব্যে  ভারতীয় এই নির্বাহী পরিচালকের অবদানের কথা জানান  যিনি পদ্মাসেতুতে ঋণ সহায়তা পাইয়ে দিতে বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তরিকভাবে কাজ করছেন।

সূত্র জানায়, ড. মোহাম্মদ তারেকের নিরলস পরিশ্রমের কারণেই বিশ্বব্যাংক তার মত পাল্টানোর মনোভাব দেখাতে শুরু করেছে। এর ভিত্তিতেই ঢাকায় বুধবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজিনা ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অনেকটা একই ভাষায় কথা বলেন।

তারা দু’জনই পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের বিষয়ে আশাবাদী। অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, তার হাতে এখনো দুই দিন সময় রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ৩১ আগস্টের মধ্যেই সরকার একটি ইতিবাচক তথ্য দেশবাসীকে জানাতে পারবে।

ড. সিদ্দিকুরের ভূমিকা

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের পক্ষে দূতিয়ালিতে ড. তারেকের মতো আরো একজন নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। তিনি হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান।

বাংলানিউজের নিউইয়র্ক করেসপন্ডেন্ট শিহাব উদ্দিন কিসলুকে টেলিফোনে বিশ্বব্যাংকের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন এই ড. সিদ্দিকুর।

এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সফর করে ড. সিদ্দিকুর রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই সফরেই তিনি বিষয়টিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে তাদের দিকনির্দেশনা যেমন নিয়ে গেছেন, তেমনি বিশ্বব্যাংকেরও প্রত্যাশার দিক এবং  বিশ্বব্যাংকের ভেতরকার বাস্তবতাসহ  শর্তগুলো পূরণের ব্যাপারে সরকারকে দিয়ে গেছেন মূল্যবান পরামর্শ ।

৩১ আগস্ট ড. সিদ্দিকুরের ফের ঢাকা সফর করার কথা রয়েছে।

নিউইয়র্ক প্রতিনিধিকে টেলিফোনে ড. সিদ্দিকুর রহমান জানান, পদ্মাসেতু প্রকল্পের ঋণের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার সম্ভাবনা অনেক উজ্জ্বল।

তিনি জানান, বেশ কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয় বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষকে। ওই স্মারকলিপি দেওয়ার পর বিশ্বব্যাংকের ইতিবাচক মনোভাব লক্ষ্য করা গেছে। অভ্যন্তরীণ কিছু আলোচনার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেবে বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

ড. তারেকের সফল মিশন

এদিকে, শুরু থেকেই ধারণা করা হচ্ছিলো, বিশ্বব্যাংকের  সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের ভুলবোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানোর দুরূহ মিশন নিয়ে ওয়াশিংটন গেছেন অর্থ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ তারেক। সবশেষ দেশে অর্থসচিবের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। গত ১১ আগস্ট ঢাকা ছেড়ে গিয়ে ১৪ আগস্ট থেকে বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। আর তার সে মিশন যে ফলপ্রসূ হয়েছে তা এখন স্পষ্ট।

অর্থমন্ত্রণালয়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও দক্ষ এই সচিবের সঙ্গে কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠতা ছিলো। তাদেরই একাধিক কর্মকর্তা জানান, ড. তারেকের এই সাফল্যে তারা খুশি।

তবে সাফল্যের চূড়ান্ত খবর এখনো তাদের কারো কাছেই নেই বলে জানিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, তারা ভালো কিছুরই অপেক্ষা করছেন।

একটি সূত্র এও জানিয়েছে, পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের ঋণ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গেলে পরবর্তী করণীয় কাজগুলো কি হবে তারও কিছু আগাম কাজ এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে শুরু হয়ে গেছে।

সূত্রটি জানায়, চূড়ান্ত সুখবরের ব্যাপারে নিশ্চিত হবার পর সরকারকে দ্রুততার সঙ্গেই অনেক কাজ শেষ করতে হবে। তারই প্রস্তুতি হিসেবে এ ধরনের কাজগুলো নিয়ে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রাথমিক আলাপ আলোচনা বা ফাইল ইনিশিয়েট করার কাজ চলছে।

ড. মোহাম্মদ তারেক ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি অর্থসচিবের দায়িত্ব নেন। ২০১২ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ওই পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

পদ্মাসেতু ইস্যুতে একটি ঘোলাটে পরিস্থিতিতেই নতুন দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বব্যাংকে যান ড. মোহম্মদ তারেক। খোদ প্রধানমন্ত্রীও পদ্মাসেতু ইস্যুতে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য করেন। এ অবস্থায় অনেকটা গুরুদায়িত্ব নিয়েই ওয়াশিংটন যান ড. তারেক।

দেশ ছাড়ার আগে এনিয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেছিলেন,  পুরোপুরি দেশপ্রেম দিয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করবেন। দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে কাজ করবেন।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সে দায়িত্বই  সঠিক পথে সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করছেন ড. মোহাম্মদ তারেক। আর তাতে একান্ত সহযোগী হিসেবে তাকে নিজের অবস্থান থেকে `ফিডব্যাক` দিয়ে গেছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও তার সঙ্গীরা।

অর্থ বাণিজ্য