প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের পাশাপাশি তাঁর দল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব থেকে পরিবেশ ও মানুষকে রক্ষায় যথাযথ ও সময় মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং তিনি বৃক্ষ রোপণের প্রচারাভিযান চালাতে কমপক্ষে প্রত্যেককে একটি করে গাছের চারা রোপনের সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ কৃষক লীগের (বিকেএল) তিন মাসব্যাপী বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ‘আপনাদের যার যতটুকু জায়গা আছে, তার ততটুকু জায়গার মধ্যে অন্তত একটি করে গাছ লাগাতে আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা যারা বিভিন্ন শহরে বসবাস করেন তারা ছাদে বা আপনাদের বাসার ব্যালকনিতে টবে গাছ লাগাতে পারেন। সরকারি অফিসের ছাদে বিভিন্ন ছাদ বাগান করা যেতে পারে।’
আজ বুধবার শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বলেন, বর্ষা মৌসুম চলাকালে ফলজ, ওষুধি ও বনজ গাছের কমপক্ষে তিনটি চারা গাছ রোপনে তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি গণভবন প্রাঙ্গনে ছাতিম, ছফেদা ও হরতকি গাছ রোপণ করেন।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি তাঁর দল জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষায় দেশব্যাপী বৃক্ষ রোপণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং আওয়ামী লীগ পরিবেশ ও দেশবাসীর প্রতি সর্বদা যতœশীল।
তিনি বলেন, ‘তাঁর সরকার ও দল সময় মতো ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ১৯৯৮ সালে সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় স্থান পায়।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বে একমাত্র দেশ যারা তাদের নিজস্ব তহবিল দিয়ে একটি জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেশকে রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ রক্ষায় আরও গাছ লাগাতে জনগণের প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করা জরুরি।
তিনি বলেন, ‘এমন মন মানসিকতা বজায় রেখে আমাদের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৮৫ সাল থেকে বৃক্ষ রোপন করে আসছে এবং আমরা বাংলা মাস আষাঢ়ের প্রথম দিন প্রতি বছর বৃক্ষ রোপণ প্রচারণা শুরু করি।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রথম এই উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং এখন আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ সংগঠন একত্রে বৃক্ষ রোপণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৃক্ষ রোপণ প্রচারণার প্রথম উদ্যোগের কথা স্মরণ করেন।
এ ব্যাপারে তিনি কক্সবাজার উপকূলে গড়ে তোলা ঝাউবনের কথা উল্লেখ করে বলেন, এ বনভূমি গড়ে তোলার উদ্যোক্তা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। এটি যে কোন শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় চলাকালে এ পর্যটন নগরীকে রক্ষায় ঢাল হিসেবে কাজ করছে।
তিনি পরিবেশ ও মানুষ রক্ষায় বর্ষা মৌসুমে প্রকৃতির যতœ নিতে ও বৃক্ষ রোপণে আওয়ামী লীগের নেতা ও কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
১৯৮৫ সাল থেকে আওয়ামী লীগের কৃষিজীবী শাখা (বিকেএল) প্রতি বছর বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি পালন করে।
বছরের পর বছর ধরে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি পালন এবং প্রকৃতির সুরক্ষার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করায় শেখ হাসিনা কৃষক লীগকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী ষষ্ঠ ‘আদমশুমারী ও গৃহগণনা-২০২২’ এর উদ্বোধন করেন, যা সফল করতে ১৫ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত এই প্রথমবারের মতো ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেশব্যাপী পরিচালিত হবে।
বৃক্ষরোপণের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ, সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতিসহ সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা।