দুই পক্ষের আইনজীবীদের তুমুল বাক-বিতণ্ডার পর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার শুনানি আবার পিছিয়েছে।
মঙ্গলবার অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীদের বিতর্কের এক পর্যায়ে বিচারক ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জহুরুল হক এজলাস ছেড়ে চলে যান।
পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি ফিরে আসে এবং আসামি পক্ষের আবেদনে সায় দিয়ে ১ অক্টোবর শুনানির পরবর্তী দিন ঠিক করেন। এনিয়ে দশম বারের মতো অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানি পেছাল।
শহীদ জিয়াউর রহমান চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে অর্থ সংগ্রহ ও খরচের দায়ে বিএনপি চেয়ারপারসনসহ চারজনের বিরুদ্ধে গত ১৫ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন।
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতির কারণে এর আগের ধার্য তারিখেও অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানি হয়নি। আগের দিন বিচারক ‘শেষ বারের’ মতো সময় আসামি পক্ষকে সময় দিয়ে মঙ্গলবার শুনানির দিন ঠিক করে দেন।
আদালতের কার্যক্রমের শুরুতেই আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জানান, খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাই আদালতে হাজির হতে পারছেন না।
আসামি পক্ষের কৌঁসুুিল খোরশেদ আলম আদালতে বলেন, অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানিতে আসামিকে হাজির থাকতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, বার বার সময় চেয়ে আসামিপক্ষ বিচারকে বিলম্বিত করছেন।
এই বক্তব্যের পর আসামি পক্ষের আইনজীবীরা অ্যাডভোকেট কাজলকে উদ্দেশ্য করে ব্যক্তিগত আক্রমণ করলে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে বাগযুদ্ধ শুরু হয়।
তখন বিচারক জহুরুল হক আসন ছেড়ে খাস কামরায় চলে যান। পরিস্থিতি শান্ত হলে তিনি ফিলে খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের পক্ষে সময় আবেদন মঞ্জুর করে শুনানির নতুন তারিখ ধার্য করেন।
খালেদা জিয়ার পক্ষে তার চিকিৎসক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিকিৎসা সনদপত্র আদালতে দেওয়া হয়। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, খালেদা জিয়ার পিঠে এবং পায়ে ব্যথা থাকায় তিনি নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন।
বিরোধীদলীয় নেতা গত দুই দিনে দলের এবং জোটের দুটি বৈঠকে অংশ নেন। দুটি বৈঠকই কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে।
মঙ্গলবার আদালতে খালেদা জিয়া অনুপস্থিত থাকলেও হাজির ছিলেন আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকার এপিএস মনিরুল ইসলাম খান। মামলার বাকি আসামি হারিছ চৌধুরী পলাতক।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে জমি কেনায় আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে তেজগাঁও থানায় গত বছরের ৮ অগাস্ট এই মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এতে অভিযোগ করা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ৭ কোটি ৮০ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ টাকা আত্মসাত করেছেন।
এতে আরো বলা হয়, কাকরাইলের সুরাইয়া খানম নামে এক নারীর কাছ থেকে ৪২ কাঠা জমি কেনার সময় জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত ১ কোটি ২৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে জমির মালিককে দেওয়া হয়, যার কোনো উৎস জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।