পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে গঠিত বাংলাদেশ ফান্ডে ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও শেষমেশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বীমা প্রতিষ্ঠান জীবন বীমা কর্পোরেশন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে পুঁজিবাজারে ধস নেমে আসার পর রাষ্ট্রায়াত্ত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) বাংলাদেশ ফান্ড নামক ৫ হাজার কোটি টাকার একটি মেয়াদহীন ফান্ড গঠনের ঘোষণা দেয়।
গত বছরের ৮ মার্চ প্রথমেই এই ফান্ড গঠনের ঘোষণা দেয় আইসিবি। এরপর ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব আরো ৭টি প্রতিষ্ঠান এ ফান্ডের উদ্যোক্তা হিসেবে বিভিন্ন অংকের অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
রাষ্ট্রায়ত্ত অপর ৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে– সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল), সাধারণ বীমা কর্পোরেশন ও জীবন বীমা কর্পোরেশন।
বাংলাদেশ ফান্ডের উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রতিশ্রুত অর্থ পরিশোধ করলেও জীবন বীমা কর্পোরেশন বাংলাদেশ ফান্ডের উদ্যোক্তা হিসেবে ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও শেষমেষ দিয়েছে মাত্র ১০ কোটি টাকা।
ফলে বাংলাদেশ ফান্ডের উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে ফান্ডের ৩০ শতাংশ অর্থ অর্থাৎ ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও শেষমেষ তা হয়নি।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে, বাংলাদেশ ফান্ডের উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪১০ কোটি টাকায়।
এ বিষয়ে আইসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফায়েকুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত সব প্রতিষ্ঠানই তাদের প্রতিশ্রুতি অনুসারে সহায়তা দিয়েছে। তবে সম্প্রতি জীবন বীমা কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠিতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আর্থিক অক্ষমতার কথা জানিয়ে আর টাকা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে জীবন বীমা কর্পোরেশন যে অর্থ দেয়নি তা আইসিবিসহ বাকি ৬টি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করবে জানিয়ে ফায়েকুজ্জামান বলেন, “এ বিষয়ে উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা হয়েছে।” অতিরিক্ত অর্থ দানের বিষয়ে তারা সবাই সম্মত হয়েছে বলেও জানান তিনি।”
এ বিষয়ে আইসিবি’র এক কর্মকর্তা জানান, মূলত বিআইএ’র ইন্ধন ও বাংলাদেশ ফান্ডের কার্যক্রমে অসহযোগিতা করার জন্যই জীবন বীমা কর্পোরেশনের হাতে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ থাকা সত্যেও এ ধরনের কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
জীবন বীমা কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পরীক্ষিত কুমার দত্তের সঙ্গে কথা বলতে তার কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদেরও পাওয়া যায়নি।
এ পর্যন্ত জীবন বীমা কর্পোরেশন ব্যতিত যে সকল প্রতিষ্ঠান প্রতিশ্রুতি অনুসারে অর্থ দিয়েছে তারা হল- আইসিবি ৫০০ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ২০০ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংক লিমিটেড ২০০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড ২০০ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড ১০০ কোটি টাকা, বিডিবিএল ১০০ কোটি টাকা এবং সাধারণ বীমা কর্পোরেশন ১০০ কোটি টাকা।