সৌদিদের কর্মসংস্থান বাড়াতে ভিসা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে রিয়াদ

সৌদিদের কর্মসংস্থান বাড়াতে ভিসা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে রিয়াদ

শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণ এবং সৌদিদের জন্য আরো কর্মসংস্থান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সৌদি সরকার যারা বিদেশি শ্রমিকদের জন্য ভিসা বিক্রি করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে শ্রম মন্ত্রনালয় থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। এর ফলে সেখানে যেতে ইচ্ছুক এবং বর্তমানে অবস্থানরত বাংলাদেশিসহ বিদেশি শ্রমিকরা সমস্যায় পড়বেন।

রোববার সৌদি শ্রমমন্ত্রী আদেল ফাকি এক বিবৃতিতে বলেন, ব্যুরো অফ ইনভেসটিগেশন এবং পাবলিক প্রসিকিউশন থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করার পর যারা এই ধরনের ভিসা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাদের শাস্তির জন্য সুপারিশ করা হবে।

যারা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ভিসা সংগ্রহের জন্য কাগজপত্র জাল করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আর এটি যদি মানুষ পাচারের সঙ্গে জড়িত কোনো ধরনের অপরাধ হয়ে থাকে তবে এর জন্য তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়।

তবে এসব পদক্ষেপ নিশ্চিতভাবেই সৌদিতে কর্মরত বাংলাদেশিসহ বিদেশি শ্রমকিদের জন্য এক কথায় অশনি সংকেত। সৌদিদের জন্য চাকরি বৃদ্ধির সরল অর্থ বিদেশিদের চাকরির ক্ষেত্র সংকোচন। সচেতন প্রবাসী কর্মীরা জানান, সৌদি সরকারের নিতাকাত সংশ্লিষ্ট এসব পদক্ষেপে বিদেশিদের চাকরি ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক ফল ফললেও বাংলাদেশিসহ সব বিদেশি শ্রমিকদের জন্যই তা সামনের দিনগুলোতে স্রেফ দুঃসংবাদই বয়ে আনবে।

ফাকি বলেন, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত রিক্রুটিং প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। আমরা এজন্য বিশেষ একটি বিভাগ খুলেছি যারা সার্বক্ষণিক তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে। নির্দিষ্ট ৬টি দেশ থেকে জনশক্তি আমদানির বিষয়টি নিয়মের আওতায় আনার হন্য প্রস্তাবিত ওই
পরিকল্পনাটি নিয়ে এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

ফাকি বলেন, এজন্য আমরা একটি কনসালট্যান্ট ফার্মের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের পর্যবেক্ষণ কাজে ৫ মাস সময় লাগবে।

সরকারি অফিস আদালতে সম্প্রতি জারিকৃত সৌদিকরণ (নিতাকাত) পদ্ধতির সাফল্যের বিষয়টি সিভিল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় এখন শ্রম মন্ত্রণালয় খতিয়ে দেখছে বলে জানান তিনি।

সরকারি পর্যায়ে প্রক্রিয়াটি চালুর বিষয়ে ফাকি বলেন, যখন সরকারি কোনো দফতর বিদেশি কর্মী নিয়োগের আবেদন করবে তার আগে তাদের দেখতে হবে ওই পদের জন্য যোগ্য কোনো সৌদি নাগরিক আছেন কিনা। উল্লেখ্য, সৌদি আরবে সরকারি অফিস আদালতে কর্মীদের প্রায় ৯০ শতাংশ এখন সৌদি নাগরিক।

আর সৌদি সরকার প্রবর্তিত বেকার নিরাপত্তা প্রকল্পের (হাফিজ আনএমপ্লয়মেন্ট প্রোগ্রাম) সুবিধাভোগীদের বিষয়ে তথ্য হালনাগাদ না করা সংক্রান্ত খবরের সত্যতা অস্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, “আমরা বেকার শ্রমিকদের তথ্য প্রতি সপ্তাহে নিয়মিতভাবে আপডেট করবো।”

উল্লেখ্য, শর্ত পূরণ না করায় প্রায় ২০ লাখ শ্রমিকের নাম-পরিচয়ে সমৃদ্ধ তথ্য ভাণ্ডার হাফিজ প্রোগ্রাম থেকে সম্প্রতি ৭ লাখ সৌদির নাম বাদ দেওয়া হয়। হাফিজ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নথিভুক্ত সৌদি বেকার নাগরিকদের ২ হাজার রিয়াল করে বেকার ভাতা দেওয়া হয়।

অর্থ বাণিজ্য