পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরি নির্ধারণের শর্তসমূহে পরিবর্তন বা নতুন একটি ক্যাটাগরি যোগ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রেসিডেন্ট রকিবুর রহমান।
সোমবার বিকেল ৩টায় অনলাইন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিএসই’র কোম্পানিগুলোর বর্তমানে ৫টি ক্যাটগরি আছে। যার মধ্যে সবচেয়ে ভালো কোম্পানিগুলো ‘এ’ ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অর্থাৎ যে কোম্পানি তার শেয়ারহোল্ডারদের কমপক্ষে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয় এবং প্রতিবছর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করে, সেসব কোম্পানিকে এ ক্যাটাগরিভুক্ত করা হয়। কিন্তু ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি লাভ পেতে চায়। তাই এই ক্যাটাগরিভুক্ত হওয়ার শর্তগুলো পরিবর্তন করা হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী বুধবার এ বিষয়টি ডিএসই’র বোর্ড সভায় উত্থাপন করা হবে। সভায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিভুক্ত হতে শর্তসমূহ পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করা হবে’।
ডিএসই’র প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এখন থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানিগুলোকে ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার শর্ত দেওয়া হতে পারে। এভাবে বি, জি, এন এবং জেড ক্যাটাগরির শর্তও পরিবর্তন করা হবে। বোর্ড সভায় আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অথবা ‘এ+’ নামের একটি নতুন ক্যাটাগরি যোগ করা হতে পারে।’
তিনি বলেন, কোন কোম্পানিকে ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত করতে এসইসি’র কাছে আমরা ৫টি শর্ত পূরণের সুপারিশ করবো। ৫টির মধ্যে কোনও কোম্পানি যদি ৩টি শর্ত পূরণ করে তবে সেই কোম্পানিকে ‘এ’ ক্যাটারিভুক্ত করা হবে। শর্ত গুলোর মধ্যে থাকবে শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে, কোম্পানির নিট গ্রোথ ইতিবাচক থাকতে হবে এবং কোম্পানির কমপ্লায়েন্স সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা বিবেচ্য থাকবে।
রকিবুর রহমান বলেন, বিনিয়োগকারীদের নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে ২৫ কোটি টাকার সেটেলমেন্ট ফান্ড গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে এ ফান্ডের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। খুব শিগগির এ ফান্ড উদ্বোধন করা হবে।
এছাড়া কোম্পানির রাইট শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো কোম্পানি রাইট শেয়ার ছাড়ার আগে কোম্পানির স্পন্সর পরিচালকদের কাছে ৫০ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে রাইট শেয়ারের টাকা গ্রহণের তারিখ ঘোষণার আগে স্পন্সর পরিচালকদের কাছ থেকে রাইট শেয়ারের টাকা আদায় করতে হবে।
এসময় তিনি আরও বলেন, অনেক কোম্পানি বিভিন্ন ঋণ পরিশোধের নামে বাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করে। পরে সেই টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করলো কিনা তা কেউ খতিয়ে দেখে না। তাই বাজার থেকে টাকা তুলে তা এসইসি’র একটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পাওনাদারদের পরিশোধ করতে হবে। তবেই কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এছাড়া আগামী ডিসেম্বর মাসে বাংলায় ডিএসই’র ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
তিনি জানান, ডিএসই’র সূচক সংশোধনের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। ইতোমধ্যে ভারতীয় কোম্পানির এস অ্যান্ড পি সূচক সংশোধনের কাজ প্রায় শেষ। নতুন সূচকে ফ্লোটিং শেয়ার গণনা করা হবে অর্থাৎ শুধুমাত্র লেনদেনযোগ্য শেয়ার গণনা করে সূচক নির্ধারণ করা হবে।