প্রথম চাঁদে পা রাখা নীল আর্মস্ট্রং আর নেই

প্রথম চাঁদে পা রাখা নীল আর্মস্ট্রং আর নেই

প্রথম চাঁদে পা রাখা অভিযাত্রী নীল আর্মস্ট্রং আর নেই। শনিবার ৮২ বছর বয়সে তিনি মারা যান। ৫ আগস্ট নিজের জন্মদিনের দু’দিন আগে আমস্ট্রংয়ের হার্টের বাইপাস সার্জারি করা হয়। হার্টের ব্লক দূর করতেই তার এই অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

নীল আর্মস্ট্রংয়ের পরিবার ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যম এ সংবাদ জানিয়েছে। তবে কোথায় তার মৃত্যু হয়েছে সে সম্পর্কে তার পরিবার কিছুই জানায়নি।

১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই সফলভাবে চন্দ্র অভিযান করেন নীল আর্মস্ট্রং, এডউইন অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স। তবে কে আগে চাঁদের মাটিতে পা রাখবেন তা নিয়ে তিনজনই ছিলেন ব্যাকুল। শেষ পর্যন্ত অ্যাপোলো-১১ নামের মহাকাশযানের অধিনায়ক হিসেবে নীল আর্মস্ট্রংই প্রথম চাঁদের মাটিতে পা রাখার দুলর্ভ সুযোগ লাভ করেন।

নীল আর্মস্ট্রং যখন চন্দ্র বিজয় অভিযানে যান, তখন তার বয়স ছিল ৩৮ বছর। আর্মস্ট্রং যে স্পেস স্যুট পরে চাঁদের মাটিতে নেমেছিলেন, তা আজো নাসায় সংরক্ষিত রয়েছে।

অবশ্য সফল চন্দ্র অভিযানের এক বছরের মাথায় নীল আমস্ট্রংকে নাসা’র অ্যারোনটিকস বিভাগের ডেপুটি অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপরই কিনসিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিষয়ের অধ্যাপক হয়ে তিনি নাসা ত্যাগ করেন। তার স্ত্রী ক্যারলের সঙ্গে তিনি কিনসিনাটি এলাকাতেও বাস করছিলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই তিনজনকে হোয়াইট হাউসে সম্মান জানিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি তিনজনকেই ‘প্রকৃত আমেরিকান নায়ক’ বলে অভিহিত করেছিলেন। তাকে আমেরিকার সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক কংগ্রেশনাল গোল্ডমেডেল প্রদান করা হয়।

ওহাইওয়ের ওয়াপাকোনেটায় ১৯৩০ সালের ৫ আগস্ট জন্ম নিয়েছিলেন এই মার্কিন অভিযাত্রী। তার বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান ছিলেন নীল। ১৯৫৬ সালে জেনেটকে বিয়ে করেন। ১৯৯৪ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তিনি বিয়ে করেন ক্যারল নাইটকে।

মাত্র ৬ বছর বয়সেই তিনি প্লেনে চড়েন। ওহাইওতে বেড়ে ওঠা নীল গাড়ির লাইসেন্স পাওয়ার আগেই প্লেন চালনার লাইসেন্স পেয়েছিলেন। ১৯৪৭ মাধ্যমিকে পড়ার সময় তিনি মার্কিন নেভির বৃত্তি পান। নেভিতে দুই বছর চাকরিকালে তিনি কোরিয়ান যুদ্ধে অংশ নিয়ে তিনটি পদক পান। ১৯৫৫ সালে তিনি নাসায় যোগদান করেন।

আর্মস্ট্রংয়ের সেই পদচিহ্ন কয়েক হাজার বছর পরেও দৃশ্যমান হবে। তবে এরপরেও আর্মস্ট্রংসহ এই তিন অভিযাত্রীর কেউই তৃপ্ত ছিলেন না। তাদের আগ্রহ ছিল মঙ্গল অভিযান নিয়ে।

নাসার মুখপাত্র ডেভ গ্যারেট নীল সম্পর্কে বলেন, তিনি (নীল) নাসা’র জীবনকে অনেকটাই ব্যক্তিগত উল্লেখ করেছেন। তাই চন্দ্রজয়ের ২৫ বছর পূর্তিতেও তিনি এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিকতা করেননি। আর্মস্ট্রং নি:সঙ্গ জীবন যাপন করতেন।

‘মানুষের এই ক্ষুদ্র পদক্ষেপটি মানব সভ্যতার জন্য ছিল বিশাল অগ্রগতি’ -চাঁদের মাটিতে পা রাখার ওই ঘটনার গুরুত্ব বোঝাতে তিনি এই মন্তব্যটি করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক