রূপরেখা নয়, লাগাতার আন্দোলনের কথা ভাবছে বিএনপি: মওদুদ

রূপরেখা নয়, লাগাতার আন্দোলনের কথা ভাবছে বিএনপি: মওদুদ

নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা নয়, বিএনপি এখন সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার কর্মসূচির কথা ভাবছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত ‘চলমান সংকট নিরসনে সরকারের ভূমিকা ও জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

“রূপরেখার কথা বলে আন্দোলন অন্যদিকে নিয়ে যেতে চাই না” মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, “রূপরেখা নয়, লাগাতার কর্মসূচির কথা ভাবছে বিএনপি। তাই এমন কৌশল অবলম্বন করা হবে যাতে ক্ষমতাসীনদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে বাধ্য করা যায়।”

“তাহলে আগে কেন রূপরেখার কথা বলেছিলেন জানতে চাইলে মওদুদ বলেন, “রূপরেখা নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছিলাম, কিন্তু সিদ্ধান্ত হয়নি।”

সরকারকে সংকটপ্রিয় আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “এ সরকার নিজ ক্ষমতা অব্যাহত রাখতে একের পর এক সংকট তৈরি করে চলেছে। সব সংকটে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ আগামী নির্বাচনে জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে দেবে।”

“এ সরকার যতো দিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা যাবে না” মন্তব্য করে “খালেদ ইব্রাহীমের তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে শেয়ারবাজারে সঙ্কট কাটানো যেতো” বলে মন্তব্য করেন মওদুদ।

তিনি বলেন, “আইন-শৃংখলার যে পরিস্থিতি তাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ৫০ বার পদত্যাগ করা দরকার ছিলো। তাদের অব্যবস্থাপনার জন্যই এ সংকট।

মওদুদ বলেন, “বিশ্বব্যাংকের সহায়তা পেতে সরকার আবার যেভাবে চেষ্টা করছে তা সরকারের অপরিপক্কতা ও অর্বাচীনতা প্রমাণ করে। এতে সরকার কতো নিচু মানের তাও প্রমাণ হয়।”

বিশ্বব্যাংকের কাছে কেন এতো মাফ ও ভিক্ষা চাওয়া হচ্ছে- সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সাবেক এই আইনমন্ত্রী।

এ সময় “সরকার হস্তক্ষেপ করে বলে বর্তমান কমিশনের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়” বলেও মন্তব্য করেন মওদুদ।

তিনি আরও বলেন, “এ আন্দোলন আরও বেগবান হবে। সরকার পরিবর্তন হবে নির্বাচনের মাধ্যমে। অবাধ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তাদের পরাজয় বরণ করতে হবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, “আমরা আশা করি সরকার সংকট নিরসন করতে পারে। কিন্তু তা তারা করে না।”

তিনি বলেন, “আসন সংখ্যার বিচারে আমরা কম হতে পারি। কিন্তু আমাদের সংসদে কথা বলতে দেওয়া হয় না। তাই গত সাড়ে তিন বছরে আমরা সংসদে যোগ দিতে পারিনি।”

এ সময় স্পিকারের বিরুদ্ধে দলীয় আচরণের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “যারা বিএনপিকে বাদ দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের চিন্তা করছে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে।”

সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে উদ্দেশ্য করে ফারুক বলেন, “আপনি হচ্ছেন করুণার মন্ত্রী। আবারও দপ্তর পেতে যেসব কথা বলছেন তা বন্ধ করুন।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফকে উদ্দেশ্য করে ফারুক বলেন, “আপনিও মুখ বন্ধ করুন। নইলে যে ক্ষয়ক্ষতি হবে তা ঠেকাতে পারবেন না।”

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুল্লাহর সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএনপির স্বণির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমীন, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি এমএম মেহবুব রহমান প্রমুখ।

রাজনীতি