বাংলাদেশের কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু নিজ দেশ মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী শিক্ষাগ্রহণের জন্য তালিকাভুক্ত হতে চলছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফ। রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে এটিকে যুগান্তকারী অর্জন বলেও উল্লেখ করছে সংস্থাটি।
রোববার (১ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে ইউনিসেফ বলেছে, প্রথম ১০ হাজার শিশুর তালিকাভুক্ত হওয়ার এ মাইলফলক চলতি মাসেই অর্জিত হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২১ সালের নভেম্বরে ইউনিসেফ ও পার্টনার কর্তৃক চালু করা মিয়ানমার কারিকুলাম পাইলট (এমসিপি) রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের শিক্ষার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা শিশুদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করতে সহায়তা করবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের মধ্যে শিক্ষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং ইউনিসেফ ও উন্নয়ন অংশীদাররা সে চাহিদার প্রতি সাড়া দিতে শরণার্থী শিবিরে কাজ করে যাচ্ছে।
ইউনিসেফের তথ্য মতে, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে প্রায় চার লাখ স্কুল-বয়সী রোহিঙ্গা শিশু রয়েছে। এদের মধ্যে তিন লাখ শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষাগ্রহণ করছে। ইউনিসেফ এবং অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদাররা বিশ্বের বৃহত্তম এ শরণার্থী শিবিরে সুবিশাল শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে। একাধিক ক্যাম্পজুড়ে তিন হাজার ৪০০টি শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে, এর মধ্যে দুই হাজার ৮০০টিই ইউনিসেফ সমর্থিত।
ইউনিসেফ জানায়, পাইলটকৃত মিয়ানমার শিক্ষাক্রমটি প্রাথমিকভাবে ষষ্ঠ থেকে নবম গ্রেডের ১০ হাজার শিশুকে লক্ষ্য করে চালু করা হচ্ছে। সাধারণত ১১-১৪ বছর বয়সী শিশুরা ষষ্ঠ থেকে নবম গ্রেডের আওতায় পড়ে। তবে বাস্তবে, অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুই শিক্ষায় পিছিয়ে পড়েছে। এ কারণে ষষ্ঠ থেকে নবম গ্রেডে ভর্তি হওয়া বেশিরভাগ শিশুর বয়স ১৪-১৬ বছর। এদের মধ্যে বয়সের দিক থেকে কেউ কিছুটা ছোট আবার কেউ কিছুটা বড়।
ইউনিসেফের উদ্দেশ্য পর্যায়ক্রমে এ পাঠ্যক্রমের বিস্তার ঘটানো, যেন ২০২৩ সালের মধ্যে সব শরণার্থী স্কুল-বয়সী শিশু নিজ দেশের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী শিক্ষালাভ করতে পারে।