‘বেইল আউট’ ইস্যুতে ওলাঁদের সঙ্গে সামারাসের বৈঠক অনুষ্ঠিত

‘বেইল আউট’ ইস্যুতে ওলাঁদের সঙ্গে সামারাসের বৈঠক অনুষ্ঠিত

শনিবার প্যারিসে গ্রিক প্রধানমন্ত্রী সামারাসের সঙ্গে বৈঠকের পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বলেছেন,“গ্রিসকে প্রমাণ করতে হবে তারা দাতাদের শর্ত পালন করতে সক্ষম।” বৈঠকে গ্রিক প্রধানমন্ত্রী সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে আরও সময় দাবি করেছেন বলে জানা গেছে।

তবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ এ ব্যাপারে কোনো আশ্বাস দেননি বলে জানা গেছে। আগামী অক্টোবারে ইউরোপীয় অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে বিষয়টি পর্যালোচনার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে গ্রিক প্রধানমন্ত্রীকে জানান তিনি।

বৈঠকের আগে সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিলো, ওলাঁদের সঙ্গে বৈঠকে সামারাস কৃচ্ছ্র-সাধন বাস্তবায়নে দাতাদের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা আরও কিছুদিন বাড়ানোর জন্য আহবান জানাবেন।

এর আগে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাংগেলা মের্কেলের সঙ্গে বৈঠকেও একই আহবান জানান তিনি। শুক্রবার মেরকেলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে একই সঙ্গে কঠোর ব্যয় সঙ্কোচন নীতি বাস্তবায়নে গ্রিসের জন্য ‘নিশ্বাঃস নেওয়ার জায়গা’ করে দেওয়ারও আহবান জানান তিনি।

জবাবে মেরকেল জানান, তিনি ইউরো জোন অর্থনৈতিক জোটে গ্রিসের অবস্থান সমর্থন করেন। তবে একই সঙ্গে দাতাদের দেওয়া শর্তাবলী দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য তাগিদ দেন তিনি।

ফ্রান্সের বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবারের বৈঠকে ফরাসি প্রেসিডেন্টের কণ্ঠেও মেরকেলের একই সুর প্রতিধ্বনিত হয়।

উল্লেখ্য, গ্রিক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগ দিয়ে উভয় দেশের নেতাই বৃহস্পতিবার গ্রিস প্রসঙ্গে আলোচনা বসেন। এ সময় উভয় নেতা গ্রিসের প্রতি সময়সীমার মধ্যেই কৃচ্ছ্র-সাধন বাস্তবায়নের তাগিদ দেন।

তবে সামারাস প্যারিসের বৈঠকে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে আরও সময় দেওয়ার আহবান জানান দাতাদের প্রতি। এর আগে তিনি যুক্তি দেন, গ্রিসের সাম্প্রতিক সামাজিক অস্থিরতা, রাজপথের সহিংস প্রতিবাদ বিক্ষোভ এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের কারণে বেঁধে দেওয়া সময় সীমার অনেকখানিই নষ্ট হয়ে গেছে।

শুক্রবার বার্লিনে অ্যাংগেলা মের্কেলের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি জানান, গ্রিস তার প্রতিশ্রুতিতে অটল থাকার পাশাপাশি সংস্কারের বাধ্যবাধকতা মেনে চলছে।

তিনি বলেন, “আমরা এখন অতিরিক্তি অর্থ চাচ্ছিনা, আমরা চাই গ্রিসের ঘুরে দাড়ানোর জন্য অতিরিক্তি সময়”।

‘ট্রয়কা’ নামে অভিহিত ত্রি-পক্ষীয় দাতা গোষ্ঠী অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে উদ্ধারে কঠোর সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের শর্তে গ্রিসকে বিশাল ঋণ সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে।  এর তিন অংশীদার হলো আইএমএফ, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক এবং ইইউ।

প্রথম দফার তহবিল ইতিমধ্যেই ছাড় করা হলেও পরবর্তী ধাপের তহবিল ছাড়ের আগে তিন পক্ষ একত্রে আগামী মাসে গ্রিসের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে। সে বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হবে গ্রিসকে পরবর্তী চালানের অর্থ তহবিল ছাড় দেওয়া হবে কি না।

শর্ত হিসেবে গ্রিসকে আগামী দুই বছরের মধ্যে ১ হাজার ১৫০ কোটি ইউরো পরিমান অর্থ ব্যয় সংকোচন করার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় দাতারা। একই সঙ্গে অন্যান্য সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের পাশাপাশি গ্রিসের প্রতি বেসরকারিকরণের গতি বাড়ানোর আহবান জানায় তারা।

পরবর্তী ধাপের ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ইউরো সহায়তা পেতে হলে গ্রিসকে এসব শর্ত বাস্তবায়ন করতেই হবে।  তবে সামারাস সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে অতিরিক্ত আরও দুই বছরের সময় চান দাতাদের কাছে।

আন্তর্জাতিক