যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই মূল্যবান কয়লাক্ষেত্রকে ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতে ছেড়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কে তৃতীয় দিনের মত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের পার্লামেন্ট। প্রচারমাধ্যমে ‘কোল গেট’ কেলেঙ্কারি হিসেবে আলোচিত এ ইস্যুতে সরকার ও বিরোধী দলের অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগে কার্যত অচল হয়ে পড়ে ভারতীয় পার্লামেন্টের অধিবেশন কার্যক্রম।
প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এ ইস্যুতে কেলেঙ্কারির দায় মাথায় নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে পদত্যাগ করতে বলেছে। অপরদিকে নিজেদের দায় অস্বীকার করে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এ ইস্যুতে বিরোধী দলের অভিযোগের মোকাবেলায় দলীয় এমপিদের পার্লামেন্টে আরো জোরালো ভূমিকা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
অপরদিকে, চলমান অচলাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার নেতা সুশিল কুমার সিনধে এ ইস্যুতে পার্লামেন্টের মূল্যবান সময় অপচয় না করার আহবান জানিয়েছেন সদস্যদের প্রতি। একই সঙ্গে অচলাবস্থা নিরসনে বৃহস্পতিবার দুপুরে লোকসভায় বিরোধী দলীয় নেতা বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।
আগামী সোমবার পার্লামেন্টের অধিবেশন আবারো শুরু হলে এ ব্যাপারে সমাধানে পৌঁছা সম্ভব হবে বলে বৈঠকের পর আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
‘কোল গেট’ বির্তক প্রথম মাথাচাড়া দেয় যখন ভারতের কেন্দ্রীয় নিরীক্ষা বিভাগ এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, ২০০৫ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যবর্তী সময় বেশ কিছু ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কয়লা খনির বরাদ্দ পাওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ১ লাখ ৮৬ হাজার কোটি রুপির ক্ষতি হয় বলে উল্লেখ করে তারা।
যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই ভারতের লোভনীয় কয়লা ক্ষেত্রগুলোর হাজার হাজার একর জমি বন্দোবস্ত নেওয়ার মাধ্যমে তারা এ সুবিধা লাভ করে বলে দাবি করে নিরীক্ষা বিভাগ। অনেক ক্ষেত্রেই যথাযথ দরপত্রের মাধ্যমে এসব বরাদ্দ দেওয়া হয়নি, আবার দরপত্র অনুষ্ঠিত হলেও প্রকৃত মূল্যের অনেক কম মূল্যে এসব কয়লাক্ষেত্র বন্দোবস্ত দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
তবে কংগ্রেস সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের দফতর থেকে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনকে বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করা হয়েছে।
অপরদিকে, সরকারের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার প্রমাণ হিসেবে এ প্রতিবেদনকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি।